ঢাকা, রবিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

গ্রামে গেলে খড়ের ঘর দেখি না: মেনন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২২
গ্রামে গেলে খড়ের ঘর দেখি না: মেনন রাশেদ খান মেনন

বরিশাল: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, আমরা উন্নয়নের অনেক বড় জায়গাতে চলে গেছি, এটা সত্য কথা এখন আর গ্রামে গেলে খড়ের ঘর দেখি না। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে।

হয়তো কোনো ঘরে যায়নি সেটা ভিন্ন কথা কিন্তু বিদ্যুতায়ন হয়েছে তো। এমপি হয়েও আমার গ্রামের বাড়িতে বিদ্যুৎ নিতে গিয়ে স্যান্ডেল খয়ে গিয়েছিল, অথচ এখন সবাই ঘরে বসে বিদ্যুৎ পায়।

বাংলাদেশে এই উন্নতি হয়েছে তো, আমরা লুঙ্গি পরে ঘুরে বেড়াই না, সবাই প্যান্ট পরি। তবে লুঙ্গিটাকে খারাপ বলছি না। কিন্তু আমরা নিজেদের এখন অনেক স্মার্ট তো বলি। আমার হাতে মোবাইল আছে, তাই পৃথিবীর সবকিছু সম্পর্কে জানতে পারছি। কৃষক-জেলে তাদের পণ্যের দাম ঠিক করে মোবাইলে।

বরিশাল নগরের কাউনিয়াস্থ নীলু-মনু ট্রাস্ট ও পাবলিক লাইব্রেরিতে অবস্থানকালে বাংলানিউজকে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি আরো বলেন, সরকার দাবি করে আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। কিন্তু মাথাপিছু আয় হচ্ছে একজনের এক হাজার কোটি টাকা, আর একজনের ১০ টাকা। সেটাকে গড় করলে যা হবে সেটাই আমরা পাচ্ছি। বৈষম্য এতো বেড়েছে, যে অর্থনীতির ভাষায় এটাকে গিনি কো অ্যাফিসিয়েন্ট বলা হয়।

এটা যদি জিড়ো পয়েন্ট ৫ এ পৌঁছায় তাহলে সে দেশ বৈষম্যে বিপদজনক পর্যায়ে চলে গেছে, আমরা অলরেডি পয়েন্ট ৪ এ চেলে গেছি। করোনাকালে আমাদের কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে দেড়লাখ, কৃষকের ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ হয়েছে পাঁচ লাখ। বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে, তবে একটা খুব অল্প ধনী গোষ্ঠীর হাতে সমস্ত সম্পদই কেবল নয়, রাজনীতিও চলে গেছে।  রাজনীতি এখন অতিক্ষুদ্র ধনী গোষ্ঠী এবং সামরিক-বেসমারিক আমলাদের হাতে চলে গেছে।

তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে আমার প্রত্যাশা, এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, এটাকে কমিয়ে উন্নয়নের ধারাটা অবশ্যই অব্যাহত রাখতে হবে।  

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল ভিত্তি ছিল একটা অসম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।  

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু ফিরে এসে ১০ জানুয়ারির বক্তৃতায় দুটি কথা তিনি বলেছিলন-যার সারাংশ তুলে ধরলে একটা হলো এদেশে ধর্ম নিয়ে আর রাজনীতি হবে না, যে যার ধর্ম পালন করবে, কোনো ধর্মের কোনো বৈষম্য থাকবে না। দ্বিতীয় কথা ছিল, বাংলাদেশ হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতার দেশ। এটাই আমাদের সংবিধানের মূল ভিত্তি। চার মূলনীতি যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল জাতীয়তাবাদ। এটাই হলো আমাদের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এর ভিত্তিতে বাংলাদেশ তার পথে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।  

নতুন প্রজন্মের কাছে আমার প্রত্যাশা আমরা অনেক উত্থান পতেনের মধ্য থেকে এসেছি, ৭৫ এর পর দেশে সামনে বাড়েনি পেছন দিকে হেঁটেছে। আমাদের সংবিধান থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা চলে গেছে। আমরা ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ করেছি, গোলাম আযমের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছি,৭৮-এ সে পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে ফিরে এসেছে এবং নির্বিঘ্নে বাংলাদেশে বসবাস করেছে। এটা আমরা চোখের সামনে দেখেছি। আমরা দেখেছি রাষ্ট্রয়াত্ব ব্যাংক-বীমাগুলো ব্যক্তি মালিকানায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২২ 
এমএস/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।