ঢাকা, শনিবার, ১২ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

টেন্ডার ছাড়াই রাস্তার সরকারি গাছ বিক্রি!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
টেন্ডার ছাড়াই রাস্তার সরকারি গাছ বিক্রি!

ঠাকুরগাঁও: টেন্ডার ছাড়াই ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে টেন্ডার ছাড়াই রাস্তার সরকারি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের কোটপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

গত শনিবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের কোটপাড়া গ্রামের রাস্তায় সরকারি গাছ কাটছিলেন কাঠমিস্ত্রি ও তার লোকজন। এ সময় সাংবাদিক ও প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে গাছ ফেলে পালিয়ে যান তারা।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন আগে আমজানখোর ইউপির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কোটপাড়া গ্রামের রাস্তায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপন করেন স্থানীয় সাইফুল ইসলাম ও আশরাফুল ইসলামসহ কয়েক ব্যক্তি। কয়েকদিন আগে রাস্তার প্রায় ৩০০ গাছ আড়াই লাখ টাকায় কিনে নেন ওই এলাকার আজিজুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী। শনিবার সকালে তিনি মিস্ত্রি দিয়ে সেই গাছ কাটতে গেলে স্থানীয় লোকজন ইউএনও কে খবর দেন। ইউএনও এ খবর পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে (তহশীলদার) ঘটনাস্থলে পাঠালে গাছ কাটা বন্ধ করে এবং এরই মধ্যে কেটে ফেলা কয়েকটি গাছের টুকরো ফেলে পালিয়ে যান তারা।

শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, সীমান্তের মন্ডুমালা বিশেষ ক্যাম্পের সামনে রাস্তার পাশে ৫/৭টি কাটা গাছ ফেলে রাখা হয়েছে। তবে গাছের মালিক ও গাছের ক্রেতাকে তাৎক্ষণিক খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গাছ লাগানো মালিকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করেন।

ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সুযোগ পেলেই একটি চক্র রাস্তার গাছ কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে। এতে স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানের হাত রয়েছে। শুধু কোটপাড়ার রাস্তার গাছ না, আশপাশের আরও কয়েকটি রাস্তার গাছও এভাবে রাতের আঁধারে কেটে নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন।

জানতে চাইলে আমজানখোর ইউপির চেয়ারম্যান আকালু (ডংগা) জানান, ইউপি কার্যালয়ে সব সদস্যকে (মেম্বার) নিয়ে রেজুলেশন করে ওই গাছগুলো বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর পর আড়াই লাখ টাকায় আজিজুলের কাছে গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে। এখন শুনছি টেন্ডার ছাড়া কোনো গাছ কাটা যাবে না। এত নিয়ম আমার জানা ছিল না। তবে গাছ কাটার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য বলেন, ইউপি কার্যালয়ে এনিয়ে কোন সভা হয়নি। তাছাড়া ৩০০ গাছের মূল্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। অথচ গাছগুলো মাত্র আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এগুলো ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করলে ইউপি কার্যালয় ২৫ ভাগ হিসেবে অনেক টাকা পাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) যোবায়ের হোসেন বলেন, রাস্তার গাছ কাটা হচ্ছে- এমন খবর পেয়ে তহশীলদারকে পাঠিয়েছিলাম। কিছু গাছ কেটে ফেলে পালিয়েছে লোকজন। নিয়ম না মেনে টেন্ডার ছাড়া গাছ কাটলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, ১১ এপ্রিল, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।