ঢাকা, শনিবার, ১২ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন: হার্ডলাইনে সরকার

তৌহিদুর রহমান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২২
যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন: হার্ডলাইনে সরকার

ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রকাশিত বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে হার্ডলাইনে রয়েছে সরকার। গত ১২ এপ্রিল এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র।

এরপর সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদনের কঠোর সমালোচনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও সমালোচনা করা হয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রথমে এর কঠোর সমালোচনা করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়েও এই প্রতিবেদন নিয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করা হয়। সেখানে প্রতিবেদনের কঠোর সমালোচনা করাও হয়।

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন যখন প্রকাশ করা হয়, তখন পররাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন দেশের বাইরে ছিলেন। তিনি ঢাকায় ফেরার পর প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিবেদনের কঠোর সমালোচনা করেছেন।

প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদনের সমালোচনা করা হয়। যদিও সরকারের এই সমালোচনা নতুন কিছু নয়। তবে এ বছর বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন হচ্ছে। এই ৫০ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক যখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে, তখন এই প্রতিবেদন ঘিরে কঠোর সমালোচনা চলছে। এমনকি এই প্রতিবেদন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, তাতে যা বলা হয়েছে, সেটা খুব তথ্য নির্ভর নয়। পত্রিকা দেখে আর এনজিওর কাছ থেকে তারা তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন করে। আর এনজিওরা সব সময়ে বলে থাকে বাংলাদেশ খারাপ। আর একদল রয়েছে, যারা বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চায়, তাই বাংলাদেশের খারাপ চিত্র দিলে তাদের লাভ হয়। এছাড়া অনেক বাংলাদেশি মার্কিন দূতাবাসে চাকরি করেন, প্রাথমিকভাবে তারাই এ খসড়া তৈরি করেন। তারাও শুধু আমাদের দোষ খুঁজে বেড়ান।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, মার্কিন প্রতিবেদন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আমরা ব্যাখ্যা চাইব। প্রতিবেদনে এমন অনেক উৎস থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে, যাদের পলিটিক্যাল এজেন্ডা রয়েছে। আমরা আশা করব, যাদের কাছ থেকে তারা তথ্য নিচ্ছেন, তাদের অতীত আরও বিস্তারিত জেনে নেবেন। নিকট অতীতে তারা কী করেছে, সেটা জানা প্রয়োজন। প্রতিবেদনে উত্থাপিত বিষয়গুলো নিয়ে তাদের ( যুক্তরাষ্ট্রের) সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

অপরদিকে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই দেশভিত্তিক প্রতিবেদনগুলো কী, তা বোঝা মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো বাস্তবভিত্তিক প্রতিবেদন। স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই প্রতিবেদনগুলো তৈরির জন্য গোটা বিশ্বে তার যত মিশন, স্টেট ডিপার্টমেন্টের ভেতরে ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কাজ করেছে এবং শ্রম অধিকার, পুলিশ ও নিরাপত্তা ইস্যু, নারীদের ইস্যু ও আরও অনেক বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছে। সব তথ্য বস্তুনিষ্ঠভাবে, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে, ন্যায্যভাবে যাচাই করে প্রতিবেদন তৈরি করাই এর দিক-নির্দেশক মূলনীতি। যুক্তরাষ্ট্র শুধু মানবাধিকার ও এর লঙ্ঘন নিয়েই রিপোর্ট করে না. দেশগুলোর পাশে থেকে পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে কাজও করে।

উল্লেখ্য, গত ১২ এপ্রিল প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২১
টিআর/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।