ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

লাইসেন্স ছাড়া ধান কিনে অবৈধ মজুদ করা যাবে না

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২২
লাইসেন্স ছাড়া ধান কিনে অবৈধ মজুদ করা যাবে না

ঢাকা: লাইসেন্স ছাড়া কেউ ধান কিনে অবৈধ মজুদ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।  

তিনি বলেন, এখন ধান কিনার মৌসুম শুরু হয়েছে।

কোনো ফরিয়া যেন বিনা লাইসেন্সে ধান-চাল কিনতে না পারে। ধান কিনতে হলে তাদের লাইসেন্স লাগবে। পাশাপাশি লাইসেন্সধারীরা ধান কিনে কোন মিলারের কাছে বিক্রি করে সে প্রতিবেদন আমাদের দিতে হবে। তাহলে আমরা স্টক ও কোন মিলে যাচ্ছে সেটা জানতে পারবো।

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সারাদেশে অভ্যন্তরীণ বোরো ধান সংগ্রহ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্স যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।  

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র বলেন, আজকে আমরা সারাদেশে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের কার্যক্রমের উদ্বোধন করছি। আজ থেকে সারা দেশে বোরো ধান সংগ্রহ শুরু হবে। আর ৭ মে থেকে চাল সংগ্রহ শুরু হবে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আর শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্য হবে নিরুদ্দেশ। ন্যায্য মূল্যে আমরা ধান ও চাল সংগ্রহ করতে চাই। সরকারের মজুদ বৃদ্ধি ও কৃষকদের ন্যায্য দাম দিতে বোরো সংগ্রহ করে থাকি। এবছর আমরা সাড়ে ১১ লাখ টন চাল ও সাড়ে ছয়লাখ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।

তিনি বলেন, আমাদের ধান সংগ্রহের অতীত অভিজ্ঞতা খুব ভালো না। যেটা আমি পরিষ্কার ভাবে বলতে চাই। আর ভালো নয় এ কারণে যে কৃষক যদি ন্যায্য মূল্য বাজারে পেয়ে যায় তাহলে তারা ধান গুদামে আনতে চায় না। আমরা জোর গলায় বলতে পারি গত দুই বছর ধান কাটা শুরু থেকেই ধান কেনা শুরু করেছি। গতবারও ২৮ এপ্রিল শুরু করেছি এবারও একই দিনে শুরু করেছি। এবছর অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যার কারণে হাওরে ধান কাটা আগাম শুরু হয়েছে। নরমালি এখন শুরু হতো ধান কাটা।  

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, লাইসেন্স ছাড়া কেউ ধান কিনে অবৈধ মজুদ করতে পারবেন না। কে কত টুকু ধান কিনছেন কোন মিল মালিকের কাছে বিক্রি করছেন তা খাদ্য বিভাগকে জানাতে হবে। খাদ্য কর্মকর্তাদের এসব তথ্য নিয়মিত অধিদপ্তরে প্রেরণ করত হবে। ধান চাল সংগ্রহের কার্যক্রমের প্রতিদিন রিপোর্ট দিতে হবে যত রাতই হোক। প্রতিদিনের রিপোর্ট প্রতিদিন দিতে হবে। কেউ অবৈধভাবে মজুদ করছে কিনা তা কঠোর নজরদারিতে থাকবে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা ধান ও চালের বরাদ্দ মাঠে মাঠে পাঠিয়ে দিয়েছি। মিলাররা চুক্তি করে চাল কেনা শুরু করে দেবে। চাল কেনার জন্য ৭ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত মিলারদের চুক্তি করতে হবে। এরপরে আর কোন সুযোগ নেই। কোনো মানসম্মত মিলাররা যদি ইচ্ছাকৃত চুক্তি না করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা রাখতে হবে। আর চুক্তি করে চাল দিতে হবে।  

প্রতি বছর আমরা কিছু নির্দেশনা দিয়ে থাকি উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ধান কাটা মৌসুমে কৃষকদের বন্ধু ভাই মনে করতে হবে। কৃষকরা কোনো ক্রমেই যাতে হয়রানির স্বীকার না হন প্রয়োজনে আমাদের জেলা উপজেলা কর্মকর্তারা কৃষকদের বাড়িতে গিয়ে ধানের আদ্রতা চেক করে গুদামে পাঠিয়ে দেবে। কৃষি মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব আছে। তাদের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আদ্রতা মাপার মেশিন দেওয়া আছে। কৃষক যাতে হয়রানি না হয় সেজন্য তারা ধানের আদ্রতা মেপে ধান নেবে। কোনো ক্রমেই ওসিলিডিরা যেন কৃষকদের হয়রানি না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পাশাপাশি এটাও চিন্তা করতে হবে ক্রয়ের লক্ষ্যপূরণে মান ছাড়া ধান চাল কেনা যাবে না। ধান ও চালের গুণগত মানের ক্ষেত্রে কোনো আপস চলবে না।  

তিনি বলেন, আমরা যেন দ্রুত সংগ্রহ অভিযান শেষ করতে পারি। ধান চাল কিনে কৃষকদের যেন সেবা দেয়া হয়। তেমনি সরকার ভোক্তাদের ১০ টাকা ও ৩০ টাকায় চাল দিয়ে সেবা করতে পারে এ বিষয়টি মনে রাখতে হবে। এই সেবার সুযোগ সবাই পায় না।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মাৎ নাজমানারা খানুমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. মজিবুর রহমান, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং পরিচালক (সংগ্রহ) মো. রায়হানুল কবীর।

এ সময় ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল, রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ, রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বরিশাল বিভাগের বরিশাল এবং খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ হতে জেলার জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা, মিল মালিক এবং কৃষক প্রতিনিধিরা অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২২
জিসিজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।