ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

যেভাবে বাড়ে কৃষিপণ্যের দাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩০ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২২
যেভাবে বাড়ে কৃষিপণ্যের দাম ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সজিব হোসেন। ঢাকার বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী তিনি।

রাজধানী খিলক্ষেতের রেলগেট কাঁচাবাজারে দৈনন্দিন বাজার করার সময় কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, ঈদের ছুটি শেষে যশোর থেকে দুইদিন আগে ঢাকায় এসেছেন। কৃষিজীবী পরিবারের সন্তান তিনি, চাকরি করার কারণে ঢাকাতে থাকেন। গ্রামের তার কৃষিজীবী বাবা ও অন্যরা যে দামে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে দেখে এসেছেন, ঢাকাতে কিনতে গিয়ে দেখেন কোনো পণ্য দ্বিগুণ আবার কোনো পণ্য তারও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

সবজির দাম দ্বিগুণ কিংবা দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ার কারণ হচ্ছে এসব পণ্য কৃষকের কাছ থেকে ভোক্তার হাতে আসা পর্যন্ত একাধিক হাতবদল হয়।

খিলক্ষেত কাঁচাবাজারের বিক্রেতা ফরহাদ আলী জানান, আজকে বাজারে পটল ৪০ টাকা, বেগুণ ৬০ টাকা, করলা ৪৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, রসুন ৬০ টাকা, ঝিঙে ৩৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৩৫ টাকা কেজিতে আর লেবু হালি প্রতি ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর খুচরা বিক্রেতারা এসব পণ্য কেনেন কাওরান বাজার ও টঙ্গীর পাইকারি আড়ত থেকে। আর এসব পাইকারি আড়তে সারাদেশ থেকে পণ্য সরবরাহ করেন কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা। ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারা পণ্য কিনে আনেন। খুলনা বিভাগের যশোরের বারোবাজার হচ্ছে দেশের অন্যতম বড় পাইকারি বাজারের হাঁট। এখান থেকে পণ্য ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের নানা প্রান্তে যায়। এছাড়া উত্তরবঙ্গের রংপুর, নওগাঁ, নাটোর, দিনাজপুর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে সবজি সরবরাহ হয়ে থাকে।

যশোর সাতমাইল বাজারে আজকের সবজির দর নিয়ে কথা হয় সেখান থেকে ট্রাকে করে রাজধানীতে পণ্য সরবরাহ করা কাঁচামাল ব্যবসায়ী মাসুদ হোসেন ও সাতমাইল বাজারের সবজির আড়তদার সজীব হোসেনের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- সাতবাজারে আজকে সকালে সবজির বাজার দর ছিল পটল ১৮- ২০ টাকা, বেগুণ ২৫-৩০ টাকা, করলা ২০-২৩ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১৮-২০টাকা, কাঁচা মরিচ ৫৫ টাকা, লাউ ২৫টাকা, পেঁয়াজ ১৮-২০টাকা, রসুন ৩০টাকা, লেবু ১৫ টাকা, ঝিঙে ১৫-১৭টাকা, চিচিঙ্গা ১৫-১৬ টাকা প্রতি কেজি আর লেবুর হালি বিক্রি হয়েছে ১২ টাকা করে।

সাতমাইল বাজারের সবজির আড়তদার সজীব হোসেন বলেন, তারা কৃষকের কাছ থেকে সবজি কিনে প্রতি মণে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা লাভ রেখে ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন।

ঢাকায় ট্রাকে করে নিয়মিত সবজি সরবরাহ করেন কাঁচামাল ব্যবসায়ী মাসুদ হোসেন। কথা হলে তিনি বলেন, পণ্য কিনে ঢাকায় পাঠাই, সেক্ষেত্রে ৩ টনের একটি পিকআপের ভাড়া পড়ে ১২ হাজার টাকা। সঙ্গে পথে অনেক জায়গায় চাঁদা দেওয়া লাগে এক থেকে দেড় হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মণ সবজিতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা লাভে বিক্রি করি কাওরানবাজার আড়তে। মূলত খুচরা ব্যবসায়ীরা যে দামে আড়ত থেকে কিনে তার থেকে প্রায় ডবল দামে বিক্রি করে থাকি।

কৃষক থেকে স্থানীয় আড়তদার, আড়তদার থেকে কাঁচামাল ব্যবসায়ী তারপর রাজধানীর কাওরানবাজারের আড়তদার হয়ে এ পণ্য যায় ঢাকার খুচরা বাজার থেকে অলিগলির ভ্যানওয়ালাদের কাছে। এতো হাত ঘুরে শেষ পর্যন্ত পণ্য একজন ভোক্তার কাছে আসে। আর এসব কারণেই বাড়ছে কৃষিপণ্যের দাম।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২২
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।