ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পরিবহন খরচ মেটাতে জেলেদের চাল বিক্রি!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৬ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২২
পরিবহন খরচ মেটাতে জেলেদের চাল বিক্রি!

চাঁদপুর: চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার জহিরাবাদ ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলেদের চাল বিক্রি করে পরিবহন খরচ মেটানোর অভিযোগ উঠেছে। হাতে নাতে বিষয়টি ধরে ফেলেন এক আওয়ামী লীগ কর্মী ও স্থানীয় জনগণ।

 

বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুরে সোনারপাড়ার চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ খানের কাছে ২০ বস্তা (এক মেট্রিক টন) চাল বিক্রি করেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা।

জানা গেছে, মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকা জেলেদের মধ্যে ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত চার মাস ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেয় সরকার। সে আলোকে এ চার মাস ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। জহিরাবাদ ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ৮৪১ জন। এর মধ্যে আজ ৭৬৬ জন জেলের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী রফিকুল ইসলাম বলেন, চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ খান ইজিবাইকে (গাজী এন্টারপ্রাইজ, প্রো. মো. সাব্বির হোসেন গাজী, মোবাইল. ০১৮৪৩৫৪৯৭৬৪) করে সরকারি চাল নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় চালের বস্তাগুলো দেখে আমার সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞেস করি। তখন তিনি বলেন, আমি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল কিনেছি। পরে আমি বলেছি, সরকারি চাল ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। এসময় স্থানীয় জনগণ ভিড় করেন। একপর্যায়ে আব্দুর রশিদ খান জনতার তোপের মুখে পড়ে মাফ চেয়ে চাল নিয়ে তার দোকানে চলে যান।  

স্থানীয় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম, ইসমাইল হোসেনসহ একাধিক লোকজন বলেন, আব্দুর রশিদ চাল নিয়ে যাওয়ার সময় জনতা আটক করেন। পরে সবার কাছে মাফ চেয়ে চাল নিয়ে চলে গেছেন তিনি। আমরা তাকে ইজিবাইকে করে চাল নিয়ে যেতে দেখেছি।

জহিরাবাদ ইউপি সদস্য কাজল বলেন, চাল আনতে গেলে পরিবহন খরচ, শ্রমিক খরচসহ নানান খরচ আছে। ওই খরচ ওঠাতে আমরা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ বস্তা চাল বিক্রি করেছি।

সরকারি চাল ক্রেতা আব্দুর রশিদ খান বলেন, আমি টাকা দিয়ে চাল কিনেছি। সরকারি চাল, নাকি ব্যক্তিগত চাল, তা জানি না।

জহিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিম গাজী বাংলানিউজকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চালাতে অনেক খরচ আছে। ওইসব খরচ আমি ব্যক্তিগতভাবে বহন করি। কিন্তু চাল আনার ব্যাপারে পরিবহন খরচ মেটাতে সব ইউপি সদস্যদের মতামত অনুযায়ী চাল বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ট্যাগ অফিসার উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি সকাল থেকে ওখানে ছিলাম। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইউএনও’র সঙ্গে মিটিং থাকায় চলে আসছি। তবে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের দায়িত্ব দিয়ে এসেছিলাম।  

তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশনা পেলে আগামী কর্মদিবসে চেয়ারম্যানের কাছে জবাব চাইব। সরকারি চাল বিক্রি একটি দুঃখজনক ঘটনা।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৪ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।