ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ঘাটাইলে ঘূর্ণিঝড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২২
ঘাটাইলে ঘূর্ণিঝড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত বিধ্বস্ত স্কুল ঘর।

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ পাঁচ শতাধিক কাঁচা ও আধা-পাকা ঘরবাড়ি বিধবস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে অনেক গাছপালা উপড়ে পড়েছে।

গাছের চাপায় স্কুলছাত্রীসহ একই পরিবারের তিনজন আহত হয়েছে।

আহতরা হলেন- উত্তর খিলগাতি গ্রামের আতাউর রহমান খান (৭০), তার ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম (৪৫) এবং নাতনি এম কে ডি আর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী রিয়া (১৩)। বয়ে যাওয়া ঝড়ে বিদ্যুতের তার ও খুঁটি লণ্ডভণ্ড হওয়ায় সকাল থেকেই ওই চার ইউনিয়নে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

শনিবার (২১ মে) ভোরে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে এ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে হঠাৎ প্রচণ্ড বেগে আসা ঘূর্ণিঝড়টি উপজেলার দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের দেউলাবাড়ি, উত্তর খিলগাতি ও মূখ্য গাংগাইর, সংগ্রামপুর ইউনিয়নের বোয়ালী হাটবাড়ি, চাপড়ী, দেওজানা, খুপিবাড়ী ও লাহেড়ীবড়ির ওপর দিয়ে বয়ে যায়। রসুলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর, ঘোনার দেওলী, মোমিনপুর, সিংহের চালা, শালিয়াবহ। লক্ষীন্দর ইউনিয়নের লক্ষীন্দর, মুরাইদ, চারিয়াবাইদ ও ফৈটামাড়িতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও শারীরিকভাবে কাজে অক্ষম সামাদ আকন্দ বলেন, আমার স্ত্রী সালেহা অন্যের বাড়িতে কাজ করে দিন যা আনে তাই দিয়েই আমার সংসার চলে। আমার একটি প্রতিবন্ধী মেয়ে রয়েছে। অনেক কষ্ট করে মাথা গোঁজার ঠাঁই করেছিলাম কিন্তু সর্বনাশা ঝড়ে সব কেড়ে নিয়ে গেছে। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া আমার রাতে থাকার ঠাঁইও মিলবে না।

রসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন জানান, মেম্বারদের নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তালিকা প্রস্তুত করছি। স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করেছি। ঘূর্ণিঝড়ে এ ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের এম কে ডি আর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হায়দার আলী বলেন, ৭০ হাত করে ২টি টিনসেড বিল্ডিং সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত ও আরেকটি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিল্ডিংয়ের দেয়াল ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যালয়টির প্রায় ৪০ লাখ টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যালয়ের ঘর ভেঙে যাওয়ায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া হুমকির মধ্যে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্লাশে আসন দিতে না পাড়ায় খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করানো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে দ্রুত বিদ্যালয়টি মেরামত প্রয়োজন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বাংলানিউজকে জানান, ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা ইউপি চেয়ারম্যানদের প্রস্তুত করার কথা বলেছি। সে মোতাবেক ওনারা কাজ করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত পরিদর্শনে যাচ্ছি বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড ও প্রকল্প বাস্তবয়ন কর্মকর্তা ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শনে আছেন। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। তালিকা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।