ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

হিমসাগর আম ভাঙা শুরু

জুলফিকার আলী কানন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২২
হিমসাগর আম ভাঙা শুরু

মেহেরপুর: লোকসানের ঝুঁকি নিয়ে মাথায় নিয়ে আমের দ্বিতীয় রাজধানী মেহেরপুর জেলার সুস্বাদু হিমসাগর আম ভাঙা শুরু হয়েছে। আমের জেলা মেহেরপুরে এবার মৌসুমের শুরুতেই বৈরী আবহাওয়ার মুখে পড়ে আম বাগান।

১০-১৫ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম বাগানে আমের মুকুল আসে কম।

শুরুতেই অতিবৃষ্টির কারণে অধিকাংশ গাছ থেকেই ঝরে যায় মুকুল। যেটুকু মুকুল অবশিষ্ট ছিল। তীব্র তাপদাহের কারণে আমের সাইজ হয় ছোট।

আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা জানান, লোকসানের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে এ বছর আম ভাঙা শুরু হয়েছে মেহেরপুর জেলাতে। আগের বছর যে বাগানে ১০০ মণ আম উৎপাদন হতো এ বছর সেখানে মাত্র ২০ মণ আম হবে। তাই লোকসান গুনতে হবে আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় দুই হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ল্যাংড়া, হিমসাগর, আম্রপালি, বোম্বায় বিশ্বনাথ, ফজলি মল্লিকা ও বারি আম-৪ জাতের আমের বাগান আছে। হেক্টর প্রতি ফলন ধরা হয়েছে ১২ দশমকি ৫০ টন। উৎপাদনরে লক্ষ্যমাত্রা ২৯ হাজার টন। এরপরও জেলার উৎপাদতি আম চাহিদা মিটিয়ে ৭০ ভাগ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম বাংলানিউজকে জানান, এ বছর শীতের অনেক পরে বাগানে আমের মুকুল কম আসে। গুটি আসার পরপরই অতি বৃষ্টিপাত হওয়ায় অনেক বাগানের আমের গুটি আগেই ঝরে গেছে। পরে অতিরিক্ত রোদের কারণে আমের সাইজ ছোট হয়েছে। তারপরেও বাজারে আমের দাম ও চাহিদা ভাল রয়েছে। যে কারণে চাষি ও ব্যবসায়ীরা এ বছরে আমে লোকসানে পড়বেনা।  

তিনি বলেন, আজকে হিমসাগর আম ভাঙা শুরু হলেও বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই জেলায় গুটি জাতের আম সংগ্রহ করে বাজারজাত করছেন ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা। এ বছর ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশে আম আমদানী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে জেলার আম কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা কৃষি অফিসের মাধ্যমে আম ব্যবসায়ী ও চাষিদের সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু করেছেন।

আম ব্যবসায়ী উজ্জল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এ বছর আমের মুকুল এসেছে কম। বাগানে আমে গুটি হওয়ার সময় অতিবৃষ্টির মুখে পড়ে। ফলে বাগানের অধিকাংশ গুটিই ঝরে যায়। পরে শুরু হয় তীব্র তাপদাহ। বাগানে আমের সাইজ খুব ছোট হয়েছে। এ বছর যারা আমের বাগান কিনেছেন তাদের লোকসান গুনতে হবে।

আম ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে জানান, আমি ১০-১২ বছর ধরে বাগান থেকে কিনে আম বাইরে পাঠিয়ে থাকি। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতে আম পাঠায়। এ জেলার আম বাংলাদেশের সব চেয়ে সুস্বাদু। তাই বাইরের জেলাতে মেহেরপুরের আমের চাহিদাও ব্যাপক। অন্য বছর যেসব বাগানে ১০০ মণ আম ভাঙতাম। সেখানে এ বছর মাত্র ২০ মণ আম পাচ্ছি।

বাগান মালিক নাঈম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর আমের ফলন কম হয়েছে। তবে বাজারে চাহিদা অনেক। দামও ভালো। গতবারের তুলনায় এ বছর বেশ কিছুদিন পর আম সংগ্রহ শুরু করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান বাংলানিউজকে বলেন, কেমিক্যাল দিয়ে কেউ যেন আম পাকিয়ে বিক্রি করতে না পারে সেজন্য আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বাজার মনিটরিংয়ের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ টিম বাজারে সর্বদা তদারকি করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।