ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ভিডিওতে দগ্ধ ছেলেকে দেখে মায়ের আহাজারি, টাকা নেই সীতাকুণ্ড যাওয়ার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৩ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২২
ভিডিওতে দগ্ধ ছেলেকে দেখে মায়ের আহাজারি, টাকা নেই সীতাকুণ্ড যাওয়ার আহত আল আমিন

হবিগঞ্জ: অগ্নিদগ্ধ এক তরুণকে স্ট্রেচারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও দেখে তাকে চিনতে পেরেছেন তার মা। কিন্তু সন্তানকে দেখতে সীতাকুণ্ড যাওয়ার গাড়ি ভাড়া নেই তার কাছে।

মা জানেনও না কোন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ছেলেকে। ভিডিওটি দেখে শুধু আহাজারি করছেন তিনি।

ছেলেটির নাম আল-আমিন (২২)। তিনি হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়নের বাগেরখাল গ্রামের বাসিন্দা। আল-আমিন তার অন্য দুই বন্ধুর সঙ্গে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে কাজ করতেন।

স্থানীয়রা জানান, ডিপোতে বিস্ফোরণ-অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই আল-আমিন নিখোঁজ ছিলেন। রোববার রাতে স্থানীয় এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিওতে দগ্ধ অবস্থায় আল আমিনকে দেখতে পান। ভিডিওটি আল আমিনের মা সুজেনা বেগমের কাছে নিয়ে গেলে তিনিও তাকে নিজের ছেলে বলে শনাক্ত করেন।

পুটিজুরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ভিডিওটি দেখার পর থেকে সুজেনা বেগম তার ছেলের জন্য কান্না করছেন। ছেলেকে দেখার জন্য বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। কিন্তু ভাড়ার টাকা না থাকায় যেতে পারেননি। সোমবার (৬ জুন) ভাড়ার টাকা যোগাড় করে দিয়ে সুজেনা বেগমকে সেখানে পাঠাবো।

দগ্ধ আল আমিনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ২য়। সম্প্রতি ফাহিম ও রাজিব নামে দুই বন্ধুর সঙ্গে কনটেইনার ডিপোতে গিয়ে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। ঘটনার দিন রাতে শুধু আল অমিনের ডিউটি ছিল। দুই বন্ধু দিনের ডিউটি করে বাসায় চলে গিয়েছিলেন।

আল আমিনের বাবা সেফু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আগুন লাগার পরপরই আল আমিন তার চাচা ফজলু মিয়ার মুঠোফোনে কল দিয়েছিলেন। তবে আগুন লেগে যাওয়ার খবর জানানোর পরক্ষণেই মুঠোফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে আর যোগাযোগ হয়নি।

পুটিজুরী ইউপি চেয়ারম্যান মুদ্দত আলী বলেন, আল আমিনের পরিবারের সদস্যরা টাকার অভাবে চট্টগ্রামে যেতে পারছেন না। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের সহযোগিতা করব।

শনিবার (৪ জুন) রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় রাসায়নিক থাকা একটি কনটেইনার বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে দু’শতাধিক মানুষ আহত হন। ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ জনে। আগুন লাগার ২০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২২ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২২
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।