ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

রাতে মদ বেচেন নৈশপ্রহরী, ধরা ছোঁয়ার বাইরে মালিক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২২
রাতে মদ বেচেন নৈশপ্রহরী, ধরা ছোঁয়ার বাইরে মালিক

চাঁদপুর: চাঁদপুর শহরের পালবাজারে দীর্ঘদিন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দেশীয় মদের ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের পরে রাতে মদের দোকান বন্ধ থাকলেও বাজারের নৈশ প্রহরীদের মাধ্যমে মদ বিক্রি হওয়ার অভিযোগও আছে।

সম্প্রতি সময়ে পাল বাজারের নৈশ প্রহরী হান্নান ও শহীদ পুলিশের হাতে মদসহ আটক হয়। বয়সের বিবেচনা না করে কিশোর বয়সীদের কাছে এসব মদ বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। বার বার অনিয়ম করলেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক এসব ঘটনায় আইনের আওতায় না এসে ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

সোমবার (২০ জুন) সকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পালবাজারের একজন ব্যবসায়ী বলেন, গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাত আনুমানিক ১১টার দিকে নতুন বাজার পুলিশ সোর্সের মাধ্যমে মদ ক্রয় করার জন্য আসে। এরপর ২শ’ টাকার একটি নোট এবং ১শ’ টাকার দু’টি নোটে চিহ্ন দিয়ে মদ ক্রয় করে। এরপর নৈশ প্রহরী শহীদ ও হান্নানকে হাতে নাতে আটক করে। অভিযান করেন শহরের নতুন বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইসমাইল। তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।

ওই ব্যবসায়ী আরো বলেন, এই দোকান থেকে প্রতিদিনই লাইসেন্স ছাড়া লোকজন মদ ক্রয় করে। নির্দিষ্ট সময়ে দোকান বন্ধ করে না। অনেক সময় রাত ১১টার পরে দোকান বন্ধ করে। রাতে মদ পান করে একাধিক ব্যক্তি বাজারে মাতাল অবস্থায় পড়ে থাকার অনেক ঘটনা আছে। কয়েকদিন আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন অভিযান করে মুরগির দোকানের খাঁচার নিচে থেকে মদের বোতল উদ্ধার করেছে এবং দোকানের মালিকদের নাম ঠিকানাও নিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

পাল বাজার মদের দোকানের মালিক পক্ষের একজন বিশ্বজিৎ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা রাতে দোকান বন্ধ করার পরে কে মদ বিক্রি করলেন, কী করল, তা আমাদের জানার বিষয় না। নৈশ প্রহরীরা কার কাছ থেকে মদ এনে বিক্রি করেন আমার জানা নেই।

দোকানের ম্যানেজার রাজন এসব মদ লোকজনের কাছে রাতে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করে এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বজিৎ বলেন, আমরা অনুমতি ছাড়া কোনো লোকের কাছে মদ বিক্রি করি না।

নতুন বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ওই রাতে গোপনে আমি অভিযান পরিচালনা করতে গেলে সফিক নামের নৈশ প্রহরী আমাকে খুব আওয়াজ দিয়ে বলে ভেতরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কয় বোতল লাগবে আমাকে বলেন। এরপর সফিক চলে গেলেও কৌশলে মদসহ বাকি দুই নৈশ প্রহরী শহীদ ও হান্নানকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তারা নিতান্তই গরবী হওয়ার কারণে তাদেরকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়।  

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুরের সহকারী পরিচালক মো. ইমদাদুল হক মিঠুন এই বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, দেশীয় মদের দোকানগুলো রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে বন্ধ করার নিয়ম। এরপর আর কোনো বিক্রি চলবে না। অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে আমরা পাল বাজার মদের দোকানে রাতে অভিযান করে মদের বোতল উদ্ধার করি। এই বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সম্প্রতি মদের বোতলসহ বাজারের যে নৈশ প্রহরী আটক হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২২ 
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।