ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

১৪ বছর ভিক্ষুক সেজে ছিলেন ফাঁসির ৩ আসামি!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৯ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২২
১৪ বছর ভিক্ষুক সেজে ছিলেন ফাঁসির ৩ আসামি! আসামিরা।

নরসিংদী: দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে ১৪ বছর ধরে ভিক্ষাবৃত্তির পর পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি।  

সোমবার (২০ জুন) সকালে গাজীপুর সদর উপজেলার আমবাগ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।

সোমবার সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানান নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান।

গ্রেফতাররা হলেন- পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের গালিমপুর গ্রামের আলেক মিয়া (৬৫), তার স্ত্রী মোছাম্মদ রুপবান (৫৭) ও ছেলে শরীফ মিয়া (৩৮)।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০০৯ সালে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের গালিমপুর গ্রামের শামসুল হককে (৪৮) প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আলেক মিয়া, শরীফ মিয়া ও রুপবানসহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। পরে ২০১৬ সালে শামসুল হক হত্যা মামলার বাদী তার ছেলে জহিরুল হককেও (২৮) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে আসামিরা। এই হত্যার ঘটনায়ও তাদের বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা হয়। আদালত ২০১৭ সালে শামসুল হক হত্যা মামলার ১২ আসামির মধ্যে ছয় জনকে খালাস দেন ও ছয় জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় জনের মধ্যে একজন জেলহাজতে থাকলেও বাকি ৫ আসামি দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে পলাতক ছিল। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তির আড়ালে পুলিশকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছে। অবশেষে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার সকালে গাজীপুর সদর উপজেলা এলাকা থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে গ্রেফতার করে। পলাতক বাকি দুই আসামি শরাফত মিয়া ও আব্দুল গাফফার মিয়াকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। জহিরুল হক হত্যা মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, পুলিশ ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের উদ্দেশে বিশ্বস্ত গুপ্তচরের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে তাদের গ্রেফতারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আসছিল। কিন্তু আসামিরা অত্যন্ত চতুর হওয়ায় তারা তাদের স্থান ও পেশা পরিবর্তন করে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে আত্মগোপনে ছিল। অবশেষে তাদের গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।

স্বামী ও শ্বশুর হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানিয়ে নিহত জহিরুল হকের স্ত্রী রোজিনা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী ও শ্বশুর হত্যার বিচার চাওয়ায় প্রতিনিয়ত আসামিপক্ষের হুমকির কারণে দুই শিশু সন্তান নিয়ে ভিটেবাড়ি ছেড়ে দীর্ঘ বছর মানবেতর জীবন-যাপন করছি। স্বামীকে হত্যার ঘটনায় পলাশ থানায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৮ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলাম। যা এখনো নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। এরপর থেকেই আসামিরা ফোনে ও আসামিপক্ষের স্বজনরা সরাসরি হুমকি দেওয়ার কারণেই আমি স্বামীর বাড়ি ছেড়ে দীর্ঘ বছর বাপের বাড়িতে রয়েছি। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ওই দুই আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করাসহ গ্রেতারকৃতদের দ্রুত ফাঁসি কার্যকর দেখতে চান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।