ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৩০ মে ২০২৪, ২১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বগুড়ায় আরও বেড়েছে যমুনা-বাঙালি নদীর পানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
বগুড়ায় আরও বেড়েছে যমুনা-বাঙালি নদীর পানি

বগুড়া: বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে জেলার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

অপরদিকে বাঙালি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) রাত ৮টার দিকে বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৗশলী মো. মাহবুবুর রহমান।

জানা যায়, গেল কয়েক দিনের বৃষ্টির সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদী তীরবর্তী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন নিচু এলাকার বসত-বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং দূরবর্তী চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ী, কর্নিবাড়ী, বোহাইল, কাজলা, চন্দনবাইশা, সারিয়াকান্দি সদর, হাটরশরপুর, কুতুবপুর, ও কামালপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলো এবং এসব এলাকার রোপা, মাশকলাই, মরিচ, স্থানীয় জাতের গাঞ্জিয়া ধানসহ ফসলি জমি পানি প্রবেশ করেছে। অনেক পরিবার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৫৭ হাজার মানুষ।  

বগুড়ায় মূলত আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকেই যমুনায় পানি বাড়তে থাকে। তবে এ বছর শুক্রবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় তা বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।  
 
উপজেলা কৃষি ও শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে এ উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর জমির পাট, ৪'শ হেক্টর জমির আউশ, ৪ হেক্টর জমির ভুট্টা এবং ১৫ হেক্টর জমির সবজি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া সারিয়াকান্দি উপজেলায় ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। শিক্ষার্থীদের উঁচু বাঁধের ওপর পাঠদান করা হচ্ছে।  

এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে সারিয়াকান্দি উপজেলায় বন্যার্তদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সারিয়াকান্দি পৌর মেয়র, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, নির্বাহী প্রকৌশলী, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। বগুড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রস্তুত রয়েছে যা অতিদ্রুত পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে।

বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, যমুনা নদীতে বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয় ১৬ দশমিক ৭০ মিটার। মঙ্গলবার (২১ জুন) সন্ধ্যা ৬টার হিসেব অনুযায়ী নদীর পানি ১৭.৩৪ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে বাঙালি নদীতে বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫.৮৫ মিটার। এ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি জানান, উজানে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে তাতে যমুনায় আরও কয়েকদিন দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে তার দাবি, পানি বাড়লেও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভাঙনের কোনো আশঙ্কা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
কেইউএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।