টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইল শহরে সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থী শিহাব মিয়াকে (১১) হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর মা আসমা আক্তার বাদী হয়ে সোমবার (২৭ জুন) রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, মামলায় ছয়জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, হত্যা ও হত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের নামে। যে ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের বেশির ভাগই ওই ছাত্রাবাসের শিক্ষক। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবু বক্কর নামে এক শিক্ষককে আটক করা হয়েছে।
গত ২০ জুন শহরের বিশ্বাস বেতকা সুপারি বাগান এলাকার সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের ছাত্রাবাস থেকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শিহাবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষকরা তার মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। স্কুল থেকে শিহাবের পরিবারকে ফোন করে একবার জানানো হয় শিহাব দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। আবার ফোন করে জানানো হয় শিহাব মাথা ঘুরে পড়ে গেছে।
শিহাব সখীপুর উপজেলার বেরবাড়ী গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াস হোসেনের ছেলে। শিহাবকে চার মাস আগে সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলে ভর্তি করা হয়। সে সুপারি বাগান এলাকায় ওই স্কুলের একটি ছাত্রাবাসে সপ্তম তলায় থাকতো। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মর্গে শিহাবের ময়নাতদন্ত হয়। শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম মিয়ার নেতৃত্বে তিন সদস্যের চিকিৎসক দল শিহাবের ময়নাতদন্ত করে। গত রোববার টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠান। শিহাবকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
শিহাবের মরদেহ উদ্ধারের পর মৃত্যুর কারণ ও হত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে দফায় দফায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে শহরের নিরালা মোড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন জান্নাতুল মাওয়া শ্যামন্তী, ফারহান নিঝুম, মেহেদী হাসান, আসলাম প্রমুখ। এ সময় তারা শিহাবকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে পুলিশ তদন্ত করছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
আরবি
