ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চরম বিপাকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে খেটে খাওয়া মানুষ

কাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২২
চরম বিপাকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে খেটে খাওয়া মানুষ

রাজবাড়ী: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ তার জৌলুস হারিয়েছে। নেই তার চিরচেনা প্রাণচঞ্চলতা, এ যেন বার্ধক্যের কঙ্কালমূর্তি বিরাজ করছে।

এ দুর্দশার কারণ পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ অঞ্চলের ২১ জেলার বেশিরভাগ জেলাগুলোই পদ্মাসেতু ব্যবহার করে রাজধানী ঢাকায় যাচ্ছে।

রাজবাড়ীসহ হাতেগোনা কয়েকটি জেলা মাত্র দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করছে। ফলে এই নৌপথে যাত্রী ও গাড়ির চাপ কমেছে। গাড়ির অপেক্ষায় ফেরিগুলি ও যাত্রীর অপেক্ষায় লঞ্চ।
চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও এই পথে তুলনামূলকভাবে যাত্রী অনেক কম রয়েছে।  

মঙ্গলবার (২৮ জুন) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ঘাট এলাকায়  মোট ১০টি লঞ্চ পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। প্রতিটি লঞ্চে ৪০-৫০ জনেরও মতো যাত্রী ছিল। পাটুরিয়া থেকে আসা লঞ্চগুলোতেও তেমন যাত্রী চোখে পড়েনি।

যাত্রীবাহী পরিবহন কম আসায় লঞ্চে যাত্রীদের তেমন চাপ দেখা যায়নি। ফলে এ ঘাটকে কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহ করা, খবরের কাগজ, কলা, তিলের খাজা, ডিম, লজেন্স, পান, বই বিক্রেতাসহ  বিভিন্ন পেশার সাধারণ মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে।


 
তারা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে আমরা দিনে ২০০০-৩০০০ টাকা বিক্রি করতাম। তাতে আমাদের ৪০০-৫০০ টাকা লাভ হতো। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় আমাদের বেচাকেনা শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এখন আমরা অসহায়। অন্য কোনো কাজ শিখিনি। কিভাবে সংসার চালাবো ভেবে পাচ্ছি না। গাড়ির জন্য ফেরিগুলো অপেক্ষা করছে। আগের মতো আর পরিবহন বা পণ্যবাহী ট্রাক নেই। রাস্তায় গাড়ির কোনো সিরিয়াল নাই।

দৌলতদিয়া ঘাটে থাকা এমভি মোস্তফা লঞ্চের চালক মো. আফজাল বাংলানিউজকে জানান, সকাল থেকে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘাট থেকে লঞ্চগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। তবে যাত্রী কমে গেছে অনেক।

লঞ্চ মালিকদের প্রতিনিধি তোফাজ্জেল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এ রুটে বর্তমানে ১৭টি লঞ্চ চলাচল করছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার কারণে লঞ্চের যাত্রী সংখ্যা ৭৫ শতাংশ কমে গেছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমরা লঞ্চ চালক ও স্টাফদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হব। এতে লঞ্চ মালিক, কর্মচারীসহ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই ক্ষতির মুখে পড়বে।

এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ’র দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আফতাব হোসেন বাংলানিউজকে জানান, সকাল থেকে ঘাটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। লঞ্চ চলাচল বন্ধের কোনো নির্দেশনা নেই। আমরা প্রতিটি লঞ্চে ৫০-৬০ যাত্রী দিয়ে লঞ্চগুলো ছেড়ে দিচ্ছি। আমরা লঞ্চের চালক ও স্টাফদের বলে দিয়েছি, যাতে যাত্রীদের সেবার মান সঠিক থাকে। সামনে পবিত্র ঈদুল আজহা এসময় যাত্রী বাড়তে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।