ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

টিকিটের দীর্ঘ লাইনে পানির জন্য কাড়াকাড়ি!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২২
টিকিটের দীর্ঘ লাইনে পানির জন্য কাড়াকাড়ি! ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা : আগামী ১০ জুলাই পবিত্র ঈদুল আযহা। এ উপলক্ষ কেন্দ্র করে শুক্রবার (১ জুলাই) শুরু হয়েছে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি।

সকাল ৮টা থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। প্রথম দিন বহু যাত্রী টিকিটের জন্য স্টেশনে এলেও অনেকেই না পেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। এতে বিশৃঙ্খলা বাড়ছে।

যাত্রীরা জানিয়েছেন, টিকিট পাওয়া যাচ্ছে, তবে খুবই ধীরে। টিকিটের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অনেকেই ক্লান্ত হয়ে মেঝেতে বসে পড়ছেন। কেউ ঘুমানোর চেষ্টা করছেন। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীদের অনেককে পানির বোতল নিয়ে কাড়াকাড়ি করতেও দেখা গেছে। এ ব্যাপারে যাত্রীদের অনেকেই জানান, দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে তারা পিপাসার্ত হয়ে পড়েছেন। লাইনে থাকায় পানি কিনতে যেতে পারছেন না। কেউ পানিয়ে নিয়ে আসলে অপরজন পান করতে চান। এটি দেখে আরেকজন চান। এ অবস্থায় কাড়াকাড়ি লেগে যায়।

কথা হয়, সুরাইয়া নামের এক যাত্রী সঙ্গে। তিনি জানান, সকাল ৬টায় যশোরের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন তিনি। এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা পর্যন্ত টিকিট পাননি তিনি। সুরাইয়া বলেন, বাসায় ছোট মেয়ে রেখে এসেছি। টিকিট যে কখন পাবো, তার নিশ্চয়তা নেই।

ফরিদ নামে একজন জানান, সকাল পৌনে ৮টা থেকে তিনি অনলাইনে পার্বতীপুরের টিকিট কাটার চেষ্টা করেছেন। বাধ্য হয়ে স্টেশনের কাউন্টারে এসেছেন তিনি। কিন্তু সেখানে ৫ তারিখের টিকিট প্রদশর্নই করছে না। অনলাইনের টিকিট কর্তৃপক্ষ ব্ল্যাক বিক্রি করে দিয়েছে বলে তার দাবি।

অভিযোগ রয়েছে, কাউন্টারে ধীর গতিতে টিকিট বিক্রি হলেও, ব্ল্যাকে দ্বিগুণ মূল্যে মিলছে।

ছবি: শাকিল আহমেদসরেজমিনে দেখা গেছে, নারীদের লাইনে ধাক্কাধাক্কি করে সিরিয়াল ভেঙে এক পুরুষ টিকিট কেনার জন্য দাঁড়িয়েছেন। বারবার পরিচয় জানতে চাওয়া হলেও তিনি পরিচয় জানাতে রাজী হননি। রেলওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন মূলত প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিশেষ সুবিধায় তাকে দাঁড়ানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

নারীদের লাইনে অনেককেই পানি নিয়ে তর্ক করতে দেখা যায়।

এ দিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে স্টেশনে যাত্রীদেরও চাপও বাড়ছে। ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রির কাউন্টারের পাশাপাশি নিয়মিত স্টেশনেও যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।

ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রি সম্পর্কে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, এর কোনো সুযোগ নাই। কাউন্টারে মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন এজেন্সির লোকজন মনিটরিং করছে। এছাড়া ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া কাউকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। তাই টিকিট কালোবাজারির কোনো সুযোগ নেই।

রাজধানীসহ ৭টি জায়গা থেকে শুক্রবার একযোগে ৩৭ টি আন্তঃনগর ট্রেনের ৫ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। একসঙ্গে দুটি মাধ্যমে বিক্রি শুরু হওয়ায় বিড়ম্বনা থাকতে পারে। কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার বলেন, সকাল ৮ টায় সাড়ে ১২ হাজার টিকিটের জন্য সাড়ে ৪ লাখ হিট পড়েছে। অধিক হিট পড়ায় মানুষে ভোগান্তি বাড়ছে। যারা অ্যাপে ঢুকতে পারছেন না তারাই মূলত অভিযোগ তুলছেন।

অভিযোগ থাকার পরও ফের সহজকে কেন অনলাইন টিকিটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; এমন প্রশ্নের জবারে মাসুদ সারওয়ার বলেন, সিদ্ধান্ত তো আমরা নেই না। সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়, আমরা শুধু তা বাস্তবায়ন করি। আর গতবার টিকিট কালোবাজারির দায়ে সহজের এক কর্মকর্তা আটকের পর প্রতিষ্ঠানটিকে শোকজ করা হয়েছিল। তারা শোকজের জবাব দিয়েছে। বিষয়টি বিচারাধীন আছে, এটা আইন দেখবে।

সবাই টিকিট পাবে কিনা- এ প্রশ্নের উত্তরে মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, চাহিদা অনেক, কিন্তু টিকিট নির্ধারিত। তাই চাইলেও সবাইকে টিকিট দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে এবার স্ট্যান্ডিং টিকিটের ব্যবস্থা থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, ১ জুলাই, ২০২২
এমকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।