মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় মানুষের ভোগান্তি দূর করতে স্বেচ্ছাশ্রমে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছে আলোর দিশারী নামে একটি সামাজিক সংগঠন।
সংগঠনের সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় বাঁশের সাঁকোটি এখন নজর কাড়ছে সবার।
বাঁশ, কাঠ, গাছের গুঁড়ি, রশি, মোটা তার দিয়ে ছড়ার ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি প্রায় ১০০ ফুট লম্বা। সাঁকোটি সবার কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে বিভিন্ন রং ব্যবহার করে নানাভাবে এটিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সাঁকোটির ঠিক মাঝখানে বসানো হয়েছে লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। টিফিনের সময় বাড়িতে যাওয়া একদল ছোট শিক্ষার্থীকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ছড়া পার হতে দেখা যায়।
আলোর দিশারী সামাজিক সংগঠনের সভাপতি পরিতোষ কুমার তাঁতী বলেন, আমরা প্রায় ২০ বছর ধরে শুনে আসছি এখানে সেতু হবে। কিন্তু এত বছরেও কিছুই হয়নি। ছড়ার একদিকে কালিঘাট চা বাগানের মূল অংশ, বাজার, উপাসনালয়। আরেক পাশে স্কুল ও মানুষের বসতি, বড় রাস্তা, পোস্ট অফিস ইত্যাদি। মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে, শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে ছড়ার ওপর দিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, এখানে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিশুদের। শিশুরা স্কুলে যাওয়ার সময় ছড়ার পানিতে নেমে অনেক কষ্ট করে ছড়া পার হয়। ছড়ায় পানি বাড়লে সেটা সম্ভব হয় না। অনেকটা পথ ঘুরে স্কুলে যেতে হয়। এসব বিষয় দেখতে দেখতে আমাদের সংগঠন থেকে একটি উদ্যোগ নিলাম এখানে একটি বাঁশের সাঁকো করার।
‘আমাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে চা বাগানের সবাই এগিয়ে এসেছে। কেউ নিজের বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ কেটে আমাদের দিচ্ছে, কেউ কাঠ দিচ্ছে, কেউ কেউ টাকা দিচ্ছে। এভাবে আমরা প্রায় দুই সপ্তাহের ভেতর একটি সাঁকো তৈরি করে ফেলেছি। ’
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিপন তাঁতী বলেন, আমার বাসা থেকে স্কুলের দূরত্ব আধা কিলোমিটার হবে। আগে স্কুলের পোশাক পরে ছড়ার পাশে এসে জুতা খুলে ও প্যান্ট ভাঁজ করে কোনোরকমে ছড়া পার হতাম, অনেক সময় প্যান্টের অনেক অংশ ভিজেও যেত। এখন বাঁশের সাঁকো হওয়ার পর বেশ আনন্দ হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
বিবিবি/আরবি