ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

কে ‘সেই শর্টগানধারী’ আজগর বিশ্বাস তারা?

ডেস্ক রিপোর্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
কে ‘সেই শর্টগানধারী’ আজগর বিশ্বাস তারা? আজগর বিশ্বাস তারা

পিরোজপুর: গত সোমবার (১১ জুলাই) বিকেলে পিরোজপুরের পিটিআই মোড় এলাকায় বেপরোয়া গতিতে যাওয়ার সময় একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ধাক্কা দেয় মোটরসাইকেলে থাকা পিরোজপুর পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি আসিফ ইকবালকে। প্রতিবাদ করায় গাড়ি থেকে নেমে এক ব্যক্তি ফিল্মি কায়দায় শটগান বের করে তাকে হত্যার হুমকি দেন।

ভিডিও ফুটেজ দেখে অবশেষে তার নাম-পরিচয় মিলেছে। তিনি আজগর বিশ্বাস তারা। বিশ্বাস প্রোপার্টিজের মালিক। খুলনার রিয়েল এস্টেট হাউজিং বিজনেস সোসাইটির (রিহ্যাবস) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। ভিন্ন মতাদর্শের হলেও ২০২১ সালের জানুয়ারিতে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে নিজেকে সদস্য হিসেবে ঠাঁই করে নেন। তারা বিশ্বাস খুলনার রায়েরমহল এলাকার মৃত হারেজ বিশ্বাসের ছেলে।    

শনিবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় পিরোজপুর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আসিফ ইকবাল বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাসা পিরোজপুর পিটিআই এলাকায়। ১১ জুলাই বিকেলে পিটিআইর উল্টোদিকে কয়েকজনকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সে সময় একই  সড়কের (বরিশাল-পিরোজপুর-খুলনা সড়ক) সার্কিট হাউজের দিক থেকে আসা একটি নম্বরপ্লেট বিহীন প্রাইভেট কার আমাদের ধাক্কা দিয়ে দ্রুত গতিতে বলেশ্বর ব্রিজে (খুলনা অভিমুখে) চলে যায়। আমি সঙ্গে থাকা লোকজনকে নিয়ে গাড়িটির পিছু নেই। এরপর শহরের বাইপাস সড়কে থাকা নতুন পানির ট্যাংকির কাছে পথরোধ করি এবং চালককে বলি এভাবে রাফ গাড়ি কেউ টানে? আমরা তো মরেই যেতাম। তখন চালকের আসনে থাকা ব্যক্তি শর্টগান বের ও লোড করে আমার বুকে তাক করে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরে কয়েকজন পথচারী এগিয়ে এলে ওই ব্যক্তি গাড়িতে উঠে দ্রুত খুলনার দিকে চলে যান। আমি তখন তার পরিচয় জানতাম না। পরে রাস্তার সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে জানতে পারলাম তিনি খুলনার বিখ্যাত ভূমিদস্যু হাইব্রিড আওয়ামী লীগ নেতা আজগর বিশ্বাস (তারা বিশ্বাস)।    

তিনি আরও বলেন, তারা বিশ্বাস নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। একটি লাইসেন্স করা অস্ত্র রাখা হয় মূলত নিজের রক্ষার জন্য। কিন্তু উনি তো হুমকি দেওয়ার জন্য অস্ত্র বের করেছেন। যিনি এভাবে অস্ত্র ব্যবহার করেন, তার অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। আমি দলের খুলনার নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তার বিরুদ্ধে জমি দখলসহ অনেক অভিযোগ আছে। আমি দল থেকে তার বহিষ্কারের দাবি জানাব।

ছাত্রলীগ নেতা আসিফ বলেন, তারা বিশ্বাস এখন আমাকে ফোন করে এক দলের লোক বলে ক্ষমা চান। আমি তাকে কোনভাবেই ক্ষমা করব না। তার যদি প্রশাসনিকভাবে ২/১ দিনের মধ্যে বিচার না হয়, তাহলে পৌর ছাত্রলীগের অধীনে মানববন্ধনসহ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আজগর বিশ্বাস তারা খুলনায় বেশ প্রভাবশালী। মূলত জমি কেনাবেঁচা করেন। জড়িত সরকারদলীয় রাজনীতিতেও। যে কারণে তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ দিলেও থানা পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। তার নামে একাধিক মামলা ও জিডি রয়েছে।

পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ জ মো. মাসুদুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা আসিফ ইকবাল। বিষয়টি আমরা বিভিন্ন প্রশাসনিক টিমকে জানিয়েছি।

আজগর বিশ্বাস তারা বাংলানিউজকে বলেন, ওই দিন আমি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গাড়ি চালিয়ে খুলনা ফিরছিলাম। এ সময় শহরের পিটিআই এলাকায় ৪টি মোটর সাইকেলে করে কয়েক যুবক আমার গতি রোধ করেন। এতে আমি ভয়ে গাড়ি থেকে নেমে আত্মরক্ষার্থে সঙ্গে থাকা অস্ত্র বের করে লোড করি। তবে কারো বুকে ঠেকানোর অভিযোগ মিথ্যা।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, ২৩ জুলাই, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।