রাজশাহী: রাজশাহীতে চেকপোস্টে কাগজপত্র দেখাতে না পারায় মামলা দিতে গেলে ক্ষোভে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন মোহাম্মদ আশিক আলী নামে এক চালক।
সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে নগরীর কোর্ট হড়গ্রাম বাজারের অক্ট্রয়ের মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজশাহীর কোর্ট সংলগ্ন অক্ট্রয়ের মোড়ে চেকপোস্টে কর্তব্যরত ছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট আব্দুল কাইয়ুম। সোমবার দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে হেলমেট বিহীন অবস্থায় তিনজন মোটরসাইকেল আরোহী ওই মোড় দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাদের থামিয়ে মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে বলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট আব্দুল কাইয়ুম। কিন্তু মোটরসাইকেলটি ছিল রেজিস্ট্রেশনবিহীন। তাই কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সার্জেন্টের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন আশিক। এরপর সেখানে অপর দুইজন ট্রাফিক সার্জেন্টের কাছে মামলা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছিলেন তিনি। এ সময় উত্তেজিত হয়ে ক্ষোভে নিজের পকেটে থাকা দিয়াশলাই দিয়ে মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন আশিক। চোখের সামনে মুহূর্তেই তা পুড়ে যায়। পরে আশিককে ট্রাফিক পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার বাবা সেখানে গিয়ে পুলিশকে সব খুলে বলেন।
জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) কোরাইশী কমল বাংলানিউজকে জানান, আশিকের বিষয়ে তার বাবা জানিয়েছেন, তার ছেলে ব্যবসায়িক ও পারিবারিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ব্যবসায় ক্ষতির পর তার স্ত্রীও বাড়ি ছেড়েছেন। এছাড়া আশিকের বিরুদ্ধে রাজশাহীর একটি আদালতে ২০ লাখ টাকা লেনদেনের মামলা চলমান রয়েছে। সোমবার দুপুরে তিনি ওই মামলায় হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় সার্জেন্ট নিয়ম অনুসারে তার মোটরসাইকেলের বৈধ কাগজপত্র দেখতে চান। তবে আশিক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তার মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়। এ সময় আশিক উত্তেজিত হয়ে মোটরসাইকেলটিতে আগুন ধরিয়ে দেন।
রাজশাহী ট্রাফিক পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি ট্রাফিক) অনির্বাণ চাকমা বাংলানিউজকে জানান, আশিকের মোটরসাইকেলটিতে এর আগেও বিভিন্ন সময় ট্রাফিক পুলিশ জব্দ করে। যা ছাড়াতে তাকে এ পর্যন্ত অনেক টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে। এরপরও তিনি মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন করেননি। এরপরও হেলমেট বিহীন অবস্থায় একই মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহী ছিলেন। এ অপরাধে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার দায়িত্ব ট্রাফিক সার্জেন্টের। কিন্তু তার বাবা জানিয়েছেন, আশিক বিভিন্ন কারণে মানসিকভাবে অনেকটা ভারসাম্যহীন। তার বাবার অনুরোধ ছিল আশিকের বিরুদ্ধে আর যেন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়ে এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান উপ-কমিশনার (ডিসি ট্রাফিক) অনির্বাণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২২
এসএস/আরআইএস