ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

দিনাজপুরে কান্তজিউ বিগ্রহ উৎসব পালিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
দিনাজপুরে কান্তজিউ বিগ্রহ উৎসব পালিত

দিনাজপুর: দিনাজপুরে পালিত হলো ঐতিহাসিক কান্তজিউ বিগ্রহ উৎসব। রাজপরিবারের প্রথা মেনে প্রায় ২৭০ বছর ধরে এই বিগ্রহ উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

বুধবার (১৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এই বিগ্রহ উৎসবের উদ্বোধন করেন দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জনশীল গোপাল। পরে বিগ্রহ নিয়ে যাত্রা শুরু করে আয়োজক কমিটি।

নদী পথের যাত্রা শেষে দিনাজপুর কাহারোল উপজেলার কান্তজিউ মন্দির থেকে জেলা শহরের কালিয়াজিউ মন্দিরে নিয়ে আসা হবে।

এদিন যাত্রা সকালে মন্দিরে লাখ লাখ সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্ত ও পুণ্যার্থীর সমাগমে পূজা আর্চনা করা হয় কান্তজিউ বিগ্রহের। এরপর পর পায়ে দেড় কিলোমিটার হেঁটে ঢেপা নদীর মন্দির সংলগ্ন ঘাটে নিয়ে আসা হয় কান্তজিউ বিগ্রহ। পরে সেখানে সজ্জিত নৌকায় যোগে দিনাজপুরের শহরের সাধুর ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে বিগ্রহটি রাত আনুমানিক ৯টার দিকে এসে দিনাজপুর শহরের কালিজিউ মন্দিরে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

এ সময় লাখ লাখ সনাতনী ভক্ত ও পূর্ণ্যার্থীরা তাদের বাড়ির বিভিন্ন ফল, দুধ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি নিয়ে এসেছিলেন কান্তজিউ বিগ্রহকে উৎসর্গ করার জন্য।



কথা হলে বিগ্রহ উৎসবে সেতাবগঞ্জ থেকে আসা প্রতিমা রাণী বলেন, মায়ের সঙ্গে দর্শন করার জন্য আমার পরিবারকে নিয়ে আমি আজকে এখানে এসেছি। ঈশ্বরের কাছে সবার জন্য মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করেছি। আমি ছোট থেকে এই উৎসব দেখে আসছি। এখানে আসলে মনে অনেক প্রশান্তি লাগে।

এ বিষয়ে কান্তজিউ বিগ্রহের পূজারী পুলিন চট্টোপাধ্যায় বাংলানিউজকে বলেন, এটি একটি চিরাচরিত নিয়ম যা রাজাদের সময় থেকে হয়ে আসছে। এখানে বিগ্রহ নয় মাস থাকে এবং কালিয়াজিউ মন্দিরে তিন মাস থাকে। কান্তজিউ মূলত আমাদের দেবতা বিষ্ণুর আরেক রূপ। ভক্তি, আরতি এখানেও হয়, ওখানেও হয়। অন্ন ভোগ হয় দুই জায়গাতেই। নৌকায় দিনাজপুরে নিয়ে যাওয়া হয় আর হাটা পথে ফেরত আসেন। নিজের বাড়ির গাছে প্রথম ফল, গরুর দুধ ঠাকুরকে উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে আসেন ভক্তরা। যাতে নিজের পরিবারে আয় উন্নতি হয়। ভক্তরা পাপ মোচন নিজের মনসকামনায় আসেন। মনের বিশ্বাস রাখতে হয়। তবেই সবকিছু সম্ভব।

জানা গেছে, দিনাজপুরের রাজপরিবারের প্রথা মেনে পালিত হয়ে আসছে চিরাচরিত এই উৎসব। কান্তজিউ বিগ্রহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবতা-ভগবান বিষ্ণুর আরেক রূপ। রাজপরিবারের রাজা প্রাণনাথ ১৭২২ সালে এই মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। পরে তার পোষ্যপুত্র রামনাথ ১৭৫২ সালে এই মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ করেন। এরপর থেকে রামনাথ এই উৎসবের প্রচলন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।