ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

গাঁজা বিক্রির অভিযোগ তুলে নড়াইলে হারেজ বাউলের আশ্রম ভাঙচুর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২২
গাঁজা বিক্রির অভিযোগ তুলে নড়াইলে হারেজ বাউলের আশ্রম ভাঙচুর

নড়াইল: নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়ায় হারেজ ফকির নামে এক বাউলের ৪০ বছরের পুরোনো আশ্রমে হামলা চালিয়ে বাদ্যযন্ত্র ও মোমের মমি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।  

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাঁজা বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের বাজে-বাবরা গ্রামের “শরিফা বাউল আশ্রমে” এ ভাঙচুর চালানো হয়।

 
 
এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে হারেজ ফকির বুধবার (৩১ আগস্ট) রাতে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।  

হারেজ ফকিরের (৭০) অভিযোগ, পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মণির লোকেরা শনিবার (২৭ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে তার আশ্রমে ভাঙচুর চালান। থানায় জিডি করার পর ইউপি চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই মিন্টু শেখ হুমকি দিচ্ছেন।
  
স্বাধীনতার পর ঘরবাড়ি সব নদীতে ভেঙে যাওয়ায় এক সাধু বাবার সঙ্গে ভারতে আজমির শরিফে চলে গিয়েছিলেন কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার চীলমারির চরের হারেজ মিয়া। চার বছর পর বাংলাদেশে ফিরে এসে বাউল সাধকদের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন। এরপর  কালিয়া বাজে-বাবরা গ্রামের বাউল মোকছেদ ফকিরের মেয়ে শরিফা বেগমকে বিয়ে করে ওই বাড়িতেই থাকতে শুরু করেন তিনি। প্রায় ৪০ বছর ধরে “শরিফা বাউল আশ্রম” নামে একটি আস্তানা খুলে বাউল গানের সাধনা করে আসছেন হারেজ। তার কিছু ভক্ত রয়েছে। তারা প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে এ বাড়িতে এসে গানবাজনা করেন। এছাড়া প্রতিবছর ২৬ অগ্রহায়ণ এখানে বাৎসরিক ওরস হয়।
 
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মণির স্বজন ও সমর্থকরা গাঁজা সেবন ও বিক্রির অভিযোগে হারেজ ফকিরকে বারইপাড়া বাসস্ট্যান্ডে মারধর ও গালি-গালাজ করেন। এ ঘটনায় হারেজ ফকির চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিলে সন্ধ্যার পর চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত অফিসে সালিশ বসে। সালিশ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর রাত ১১টার দিকে চেয়ারম্যানের বড়ভাই মো. আলী মিয়া শেখের হুকুমে চাচাতো ভাই মিন্টু শেখের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি দল হারেজ ফকিরের আস্তানায় ভাঙচুর চালায়।   
মিন্টু শেখ ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কোনো কিছুই ভাঙচুর করিনি। হারেজ ফকির এখানে গাঁজার ব্যবসা করে। এ কারণে চেয়ারম্যান আর আলী মিয়া তাকে এসব অনৈতিক কাজ করতে নিষেধ করেছেন।
   
পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মণি বাংলানিউজকে বলেন, মারধরের ঘটনায় আমি বসে মিটিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ভাঙচুরের কোনো খবর আমি জানি না।
 
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাসনিম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২২
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।