ঢাকা: বাংলাদেশে বিনিয়োগ আসছে না, এমন মন্তব্য সত্য না বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, এখানে এতো বিনিয়োগ আছে যে, আমরা সেই জায়গা করে দিতে পারছি না।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে দৈনিক ইত্তেফাকের আয়োজনে 'দেশীয় বিনিয়োগে চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ চ্যানেল তৈরি করেছেন। কয়েকদিন আগে আমেরিকার ৩৮টি কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারা বলেছে, দেশের ঘষিয়াখালি চ্যানেলে আমরা স্ট্যাডি করবো। নেভিগেশন লক করার জন্য বিনিয়োগ করবো। এটা আমাদের জন্য একটা বিরাট ব্যাপার। আমেরিকান একটা কোম্পানি বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিয়োগ করছে। এ জায়গাটা তৈরি করেছে বর্তমান সরকার।
তিনি বলেন, দেশে বিনিয়োগের বিশাল সুযোগ রয়েছে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর চট্টগ্রাম বন্দরে ২০০৮ সালের পরে ৪২টি জাহাজ বানানো হয়েছে। এ জাহাজগুলো মালিকরা প্রতিটি জাহাজ পঁচিশ থেকে ৩০ কোটি টাকা ব্যয় করে বানিয়েছেন এবং তারাই এ ব্যবসা করছে।
তিনি আরও বলেন, বন্দর নিয়ে আমরা এখন চিন্তিত না, বাস্তবায়ন পর্যায়ে আছি ও এটা সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আমরা অনেকেই জানি না হয়তো, কয়েকদিন আগে আমরা দেশীয় ইয়ার্ডে বানানো একটা জাহাজ ইংল্যান্ডে রপ্তানি করেছি। যেটা পাঁচ মিটার বরফ কেটে চলতে পারবে। সুতরাং এ জায়গায় যদি কেউ বিনিয়োগ করে তাহলে আসতে পারে। কারণ সেই সক্ষমতা বাংলাদেশের তৈরি হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের কিছু দুর্বলতা আছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী খালিদ বলেন, বন্দরে অনেক দুর্বলতা রয়েছে এবং এগুলো আমরা দুর করতে চাই। এখানে আরও বেশি সেবা দিতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা কিন্তু দরজা খুলে দিয়েছি। সমুদ্রে যেমন আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সীমানা নির্ধারণ হয়েছে, তেমনি আমরা অর্থনীতির দরজাও খুলে দিয়েছি। সেখানে বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে। আমরা চাই দেশি বিনিয়োগের সঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগও আসুক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হচ্ছে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে। এটি শুরু হয়েছে। এখন ২০ ঘণ্টা বন্দর খোলা থাকে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত নৌপথ ড্রেজিং করে স্মুথ করার জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছি। আমরা স্ট্যাডি শুরু করে দিয়েছি; পদ্মা সেতুর পাড়ে যে শিমুলিয়া ঘাট, সেখানে একটা কন্টেইনার টার্মিনাল করা যায় কিনা।
নৌপথের গুরুত্ব উল্লেখ করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা যদি নৌপথ তৈরি না করি তাহলে ছয় লেন বলেন, ডাবল রেললাইন বলেন যা-ই বলেন না কেন, সব জ্যাম লেগে থাকবে। একটা ট্রাকে একটা কন্টেইনার আসে, কিন্তু একটা জাহাজে ২০০ থেকে ৩০০ কন্টেইনার আসে। সুতরাং আমাদের নৌপথ দিয়ে কন্টেইনার নিয়ে আসার কথা ভাবতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের লাইফলাইন। এর সঙ্গে আমরা আরও কয়েকটা বন্দরের সংযোগ ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা অভ্যন্তরীণ প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার নৌ-পথ টার্গেট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। যেটা ব্যবসায়ীদের জন্য পণ্য পরিবহন ও নৌ-যোগাযোগে খুব উপকারী হবে।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
গ্লোবাল টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান, এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক ও পোর্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রধান অঞ্জন শেখর দাশ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২
এমকে/আরআইএস