ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জাতীয় চিড়িয়াখানার অনিয়মের চিত্র

জি এম ‍মুজিবুর, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০২২
জাতীয় চিড়িয়াখানার অনিয়মের চিত্র চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীরা। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রেগুলোর মধ্যে শিশুদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান জাতীয় চিড়িয়াখান। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে অভিভাবকদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায় জাতীয় চিড়িয়াখানায়।

 

প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী জাতীয় চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে। ১৮৬ একর জায়গার ওপর অবস্থিত এই বিনোদনকেন্দ্রটি। ১৯১ প্রজাতির প্রাণী আছে, সবমিলে দুই হাজারের ওপরে প্রাণী আছে ওই চিড়িয়াখানায়। কিন্তু বিভিন্ন অনিয়ম আর অবহেলার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে জাতীয় চিড়িয়াখানা।

চিড়িয়াখানায় ঢুকেই একটু সামনে গিয়ে দেখতে পাবেন বড় আকারে পাখির খাঁচা, তার মধ্যে রয়েছে নানা রকমের বক তাদেরকে দেওয়া হয়েছে প্রচুর খাবার।  কিন্তু কোনো বক খাবার খাচ্ছেন না। কোন বক গন্ধযুক্ত একটি মাছ মুখে তুলে ফেলে দিচ্ছে।  কারণ মাছগুলো মরা ও গন্ধ। বক তাজা মাছ খেতে পছন্দ করে।

চিড়িয়াখানার ভেতরে একটু আগালে দেখতে পাবেন অনেকগুলো খাঁচা। সেগুলো খালি পড়ে আছে। তাতে লতাপাতা ও আগাছায় ডেকে আছে। দেখেই মনে হবে বছরের পর বছর অযত্নে পড়ে আছে খাঁচাগুলো।



চিড়িয়াখানার দক্ষিণ পাশে ছোট পরিসরে বানানো আছে শিশুদের জন্য পার্ক। কিন্তু সেখানে বেশিরভাগ সিঁড়িগুলো ভাঙাচুরা। শিশুরা যাতে সেগুলোতে খেলতে না পারে সেজন্য কাঁটাযুক্ত গাছের ঢাল দিয়ে সিঁড়ি ঢেকে রাখা হয়েছে।  
 


পার্কটিতে থাকা চার থেকে পাঁচটা দোলনার শিকল ছেঁড়া। সেখানে কাঁটা দিয়ে আটকানো।

একপাশের শিকল ছিঁড়ে ঝুলে আছে একটি দোলনা । ছেঁড়া দোলনার একাংশ উঁচু করে লটকিয়ে রাখা হয়েছে। নতুনভাবে মেরামত করার কোনো উদ্যোগ নেই।



ছবির খেলনাটির বেশিরভাগ অংশ মাটির নিচে ঢুকে গেছে। তার ওপরের ঘাস দেখে মনে হয় যুগ যুগ ধরে অবহেলায় পড়ে আছে এটি। শিশুরা ওই লোহার সঙ্গে আটকে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে।

অসহায়ের মতো দর্শনার্থীদের দিকে তাকিয়ে আছে আফ্রিকান এই সিংহটি। তার শরীরের ক-টি হাড় আছে যেকোনো শিশু খুব সহজেই গুণে ফেলতে পারবে। সিংহের অসহায় চেহারা দেখে মনে হচ্ছে অপুষ্টি ও রোগে আক্রান্ত।

বাজার থেকে আনা পচা মাছ পানি দিয়ে পরিষ্কার করছেন চিড়িয়াখানার দুইজন কর্মী। পরে তারা সে মাছ চিড়িয়াখানার পাখিদের খাওয়ার জন্য দেবেন।  ছবি তোলার সময় দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছিল না।
 

চিড়িয়াখানায় হকার প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা থাকা পর ভেতরে আইসক্রিমসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছেন।  অনেক সময় দর্শনার্থীদেরকে ভোগান্তিতে ফেলছেন তারা।



জাতীয় চিড়িয়াখানায় ধূমপান করা নিষেধ, তারপরও ওই ব্যক্তি আয়েশ করে সিগারেট টেনে যাচ্ছেন।



জনসমাগম আছে এমন প্রায় প্রতিটি স্থানেই দেখা যায় ভিক্ষুকের আধিক্য। কিন্তু চিড়িয়াখানার মতো জায়গায় ভিক্ষুক! সেখানেও রীতিমতো ভিক্ষুকের উৎপাত।  সব মিলে অবহেলার আর দায়িত্বহীনতার মধ্য দিয়েই চলছে চিড়িয়াখানার প্রতিদিনের কর্মযজ্ঞ।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২২
জিএমএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।