ঢাকা, শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চরাঞ্চলে মহিষ পালন লাভজনক

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২২
চরাঞ্চলে মহিষ পালন লাভজনক

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা, ধরলাসহ ১৬টি নদ-নদী অববাহিকার চরাঞ্চলগুলোতে লাভজনক হয়ে উঠেছে মহিষ পালন। তবে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চরাঞ্চলগুলোতেই মহিষ পালন বেশি দেখা যায়।


 
চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ চারণভূমিতে জন্মানো সবুজ লতাপাতা আর সবুজ ঘাস সহজেই খাদ্য হিসেবে পাওয়ায় অল্প পুঁজিতে মহিষ পালন করে নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাচ্ছে এখানকার চাষি ও খামারিরা।
 
ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার রৌমারী, রাজিবপুর, উলিপুর, চিলমারী উপজেলার চরাঞ্চলগুলোতে খোলা আকাশের নিচে চড়াতে দেখা যায় মহিষের পাল। চারণভূমিতে জন্মানো সবুজ ঘাস খেয়ে চড়ে বেড়ানো এবং নদের পানিতে নেমে সাঁতার কাটা মহিষগুলোর স্বাস্থ্যও চমৎকার। চরে জন্মানো ঘাস-পাতা এদের মূল খাদ্য হওয়ায় খরচও কম হয় চাষিদের। মহিষ পালনে তেমন যত্ন না নিলেও প্রাকৃতিকভাবেই এরা বেড়ে ওঠে। চরের মহিষের দুধের চাহিদা অনেকটা বেশি থাকায় লাভবান হচ্ছে পালনকারীরা। অনেকে বাড়িতে নিজেরাই দুধ থেকে দই, মিষ্টি, ঘিসহ মুখরোচক খাবার তৈরি করে হাটে নিয়ে বিক্রি করে পরিবারের চাহিদা মেটাচ্ছেন। চরাঞ্চলে মহিষ পালন

রৌমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের অভ্যন্তরের খেরুয়ার চরের মহিষের রাখাল আয়নাল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, চরের প্রায় প্রত্যেক কৃষকের তিন থেকে চারটা মহিষ রয়েছে। মহিষ পালনে তেমন যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন না থাকায় প্রাকৃতিকভাবেই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে এরা বেড়ে ওঠে। তার ওপর চরেই প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ঘাস-পাতা এদের খাদ্য চাহিদা পূরণ করে। চরাঞ্চলে মহিষ পালন

রৌমারী উপজেলার বন্দব ইউনিয়নের খেরুয়ার চরের একজন সাধারণ কৃষক গোলাপ সরকার বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই চরাঞ্চলে মহিষ পালন হয়। আগে বাপ-দাদাদের আমলে অনেক বেশি পরিমাণে মহিষ পালন হতো। চরের প্রায় প্রত্যেক কৃষকের দুই থেকে চারটি করে মহিষ রয়েছে। তার নিজেরই তিনটি মহিষ আছে। মহিষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় রোগ-বালাই কম হয়। তেমন একটা খরচ না করেই দুধও পাওয়া যায় বেশি। এছাড়া মহিষের মাংস সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদাও প্রচুর।

রৌমারী উপজেলার বন্দব ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে মহিষ পালনের ইতিহাস অনেকদিনের। এক সময় খেরুয়ার চর, বড় চর, ফেইচকার চরসহ বিভিন্ন চরের গৃহস্থদের শত শত মহিষ ছিল। এখন তা কমে গেলেও ধারাবাহিকতা এখনো রয়েছে। চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ প্রান্তরে নির্বিঘ্নে মহিষের দল বিচরণ করতে পারায় তেমন একটা পরিচর্যা বা খাদ্য খরচ ছাড়াই প্রাকৃতিক পরিবেশে মহিষ বেড়ে ওঠে। গ্রামের হাট-বাজারগুলোতে চাহিদা বেশি থাকায় প্রায় সারা বছরই মহিষের দুধের মূল্য বেশি থাকে। চরাঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশে লাভজনক হওয়ায় প্রায় প্রত্যেক কৃষক মহিষ পালন করেন।
  
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২২
এফইএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।