ঢাকা, রবিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বরিশালে শ্মশান দীপাবলি উৎসব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২২
বরিশালে শ্মশান দীপাবলি উৎসব

বরিশাল: কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বরিশালে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় শ্মশান দীপাবলি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ উপলক্ষে নগরের কাউনিয়ায় বরিশাল মহাশ্মশানে রোববার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মৃত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায় মোমবাতি ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।

মহাশ্মশানে স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায় প্রতিবছরের মতো এবারও জমায়েত হয়েছেন পূজা-অর্চনার জন্য।

স্বজনরা মনে করেন প্রয়াতদের সমাধিতে পূজা-অর্চনা করলে তাদের আত্মা শান্তি পায়। পাশাপাশি এ সময় অনেকেই মৃতদের পছন্দের খাবার সমাধিতে রেখে উৎসর্গ করা হয়। তাই স্বজনদের সমাধিতে কেউ মোমবাতি, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। আবার কেউ কেউ মৃত ব্যক্তির পছন্দের খাবার দিয়ে নৈবেদ্য সাজিয়ে স্মরণ ও আত্মার শান্তি কামনা করেন।  

এদিকে মৃত ব্যক্তিদের স্বজনরা যারা দেশে থাকেন না। সেসব মৃত ব্যক্তিদের সমাধিগুলোকে কমিটির পক্ষ থেকে আলাদা রঙ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সমাধিগুলোতে শ্মশান কমিটির উদ্যোগে দীপাবলি উৎসবের দিন সন্ধ্যায় মোমবাতি, ধুপকাঠি ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়।

যদিও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ছাড়াও শশ্মানে অনেকেই দীপাবলির আয়োজন দেখতে আসেন। এদিকে প্রতিবছরের মতো এবারও ভারত, নেপাল থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে স্বজনদের সমাধিতে প্রদীপ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের জন্য স্বজনরা এসেছেন।

শ্মশান কমিটির নেতারা জানান, প্রায় ২০০ বছরের পুরানো নগরী কাউনিয়াতে ৫ একর ৫৯ শতক জমিতে এ মহাশ্মশানের অবস্থান। যেখানে ৭০ হাজারের মতো কাঁচা ও পাকা সমাধি রয়েছে। প্রায় দুইশ বছর ধরে চলা এ উৎসবে সমাধিগুলোতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।

৭০ হাজার সমাধির এ মহাশ্মশানে নিরাপত্তা নিশ্চিতে শ্মশান দিপালী এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র‌্যাবসহ সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন শ্মশান রক্ষা কমিটির একশ’ স্বেচ্ছাসেবক।

বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকার বলেন, শশ্মানের সার্বিক নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব ভলান্টিয়ারও নিয়োজিত রয়েছে। তবে করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সব কিছু করা হচ্ছে।

অপরদিকে ধর্মীয় এ অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার। তিনি বলেন, নিরাপত্তার চাদরে ঢেকেছে পুরো মহাশ্মশান এলাকা।

এদিকে উৎসব চলাকালে নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলামসহ বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

প্রসঙ্গত, কবি জীবনানন্দ দাশের বাবা সত্যামনন্দ দাশগুপ্ত, পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত, ব্রিটিশবিরোধী নেতা বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, মনোরমা বসু মাসিমাসহ বহু খ্যাতিমান মানুষের সমাধি রয়েছে এ মহাশ্মশানে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২২
এমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।