ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভাসান চরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ম্যুরাল  

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
ভাসান চরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ম্যুরাল
  ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের অংশীদার সংস্থা আর্টোল্যুশনের সঙ্গে মিলে শিল্পের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তার অভাবনীয় উদ্যোগে যোগ দিয়েছেন কার্টুনিস্ট রাশাদ ইমাম তন্ময়। সম্প্রতি ভাসান চরে আশ্রিত শরণার্থীদের সঙ্গে দেখা করে তন্ময় তাদের জীবনের গল্প শোনেন।

তিনি তাদের সবাইকে নিয়ে সেই সব গল্প তুলে ধরেন এক বিশাল ম্যুরালের মাধ্যমে। এ ম্যুরালের ভেতরের ছোট ছোট পেইন্টিংয়ে উঠে এসেছে শরণার্থীদের চাহিদা, কষ্ট, আশা ও স্বপ্নের খণ্ডচিত্র।
 
ভাসান চরের ম্যুরাল নিয়ে বুধবার (২৩ নভেম্বর) ঢাকার ইউএনএইচসিআর অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও ও কার্টুনিস্ট রাশাদ ইমাম তন্ময়।
 
ভাসান চরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে উচ্ছ্বসিত তন্ময় বলেন, চিন্তা করুন কিছু শিশুর কথা, যারা জীবনে কখনও রং বা তুলি ধরেনি। আবার ওরাই সবাই মিলে আমাকে সাহায্য করেছে ১৭০ ফুট দীর্ঘ পেইন্টিং শেষ করতে। এ ম্যুরালটিতে খুব সুন্দরভাবে উঠে এসেছে শরণার্থীদের অর্থবহ জীবন, আত্মপরিচয় এবং মানসিক শান্তির সন্ধান।
 
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ইউএনএইচসিআর ও মানবিক সংস্থাগুলো ভাসান চরে বিভিন্ন পরিষেবা ও মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে। বর্তমানে প্রায় ২৭ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ভাসান চরে রয়েছে, যার প্রায় ৮০ শতাংশই নারী ও শিশু। ইতোমধ্যেই তাদের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্য, সুরক্ষা, পুষ্টি, পানি ও পয়ঃনিস্কাশনের মতো সেবাগুলো দেওয়া হচ্ছে।
 
বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও বলেন, আর্টোল্যুশন ও আমাদের অংশীদার সংস্থা তের দেজমে'র প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিল্পের মাধ্যমে শরণার্থীদের মানসিক ক্ষতির প্রশমন। এ শরণার্থীরা অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করেছে এবং এরকম ছবিগুলো আঁকার মাধ্যমে তারা কিছুটা হলেও প্রশান্তি খুঁজে পায়। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে তন্ময়কে এক সঙ্গে এত সুন্দর কাজ করতে দেখে আমি আপ্লুত। হাসি আর কান্নার মাধ্যমে যখন শরণার্থীদের জীবনের গল্পগুলো উঠে আসছিল, আমরা আবারও বুঝতে পারছিলাম যে আমাদের সবারই একই ধরনের মানবিক আবেগ ও অনুভূতি রয়েছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত মানসিক স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারে শিল্প একটি অসামান্য হাতিয়ার।
 
আর্টোল্যুশন কক্সবাজারে ও ১৭টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইউএনএইচসিআর এর সঙ্গে কাজ করছে একইভাবে পেইন্টিং এর মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে। ছবি ও শিল্প সাহায্য করে নিজস্ব সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও আত্মপ্রত্যয় বজায় রাখতে। শরণার্থীরা এ ছবিগুলোর মাধ্যমে তুলে ধরছে তাদের আত্মপরিচয়, তাদের দুঃসহ অতীত, বর্তমান চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যতের স্বপ্ন।
 
ইউএনএইচসিআর ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ভাসান চরে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা ও সহায়তা দেওয়ার জন্য। চরে শরণার্থীদের সব চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে ইউএনএইচসিআর বদ্ধপরিকর। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানায় এ কাজে তাদের নিয়মিত সহায়তা বজায় রাখতে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
টিআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।