ঢাকা: রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক টানাপোড়ন- সব মিলিয়ে দৌড়ের উপর থাকা সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াত ভুলে কেবল এক জায়গাতেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মিছিল করে, হাততালি দেয়। হারার কষ্ট ভুলে পরস্পরকে সান্ত্বনা দেয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসার জায়গাটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গিয়েছে দেশের ক্রিকেটের অন্যতম গর্ব আশরাফুলের ম্যাচ ফিক্সিং কেলেংকারিতে জড়িত থাকায়। অজানা একটা ভয়ও কাজ করছে- না জানি আবার কাদের নাম আসছে।
প্রাক্তন অনেক ক্রিকেটারদের আমরা বীরের মতো বিদায় দিয়েছি। তাদের কয়েকজনকে নিয়ে চলছে প্রচুর আলোচনা। আকসুর রিপোর্টে যদি তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে দেশের প্রতিটি ক্রিকেটপাগল সমর্থকের মানসিক অবস্থা কেমন হবে, সহজেই অনুমেয়।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার আশরাফুলের জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করাটাকে অনেকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। কিন্তু ব্যাপারটায় মোটেও পজিটিভ কিছু নেই।
ছোট একটি উদাহরণ দিই। একটা চোর ধরা খেলে প্রথমে কিন্তু সে ধোলাই খাওয়ার আগ পর্যন্ত স্বীকার করে না যে চুরি করেছে। আশরাফুলের ব্যাপারটাও ঠিক তাই।
আশরাফুল যদি সত্যি বিবেকের তাড়নায় ম্যাচ ফিক্সিং কেলেংকারির জন্য ক্ষমা চাইতেন, তাহলে আকসুর কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেওয়ার পরপরই ক্ষমা চাইতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নি।
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের সূত্র মতে, আশরাফুল নিজেকে রক্ষার জন্য বেশ কয়েকবার দেন-দরবার করেছেন ক্রিকেট বোর্ডে। ক্রিকেট বোর্ড বিন্দুমাত্র ছাড় না দিয়ে বহিষ্কার করার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে তড়িঘড়ি করে আশরাফুল ক্ষমা চেয়েছেন।
ক্রিকেটের স্বার্থে, ক্রিকেটারদের স্বার্থে আমাদের উচিত সহানূভূতির জায়গাটাকে প্রশ্রয় না দিয়ে আশরাফুলসহ যারা যারা ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত, তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করা।
ম্যাচ ফিক্সিং ব্যাপারটার যদি যেনতেন একটা বিচার হয়, তাহলে আগামীর জন্য অনেক ক্রিকেটারকেই প্রশ্রয় দিয়ে ফেলা হবে। যদি কঠিন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে সবার কাছে একটা বার্তা পৌঁছে যাবে- যত বড় খেলোয়াড়ই হও না কেন, অন্যায় করলে কঠিন শাস্তি পেতেই হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৩
এইচএসআর/[email protected];জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর