ঢাকা: কথা দিয়ে কথা রাখেনি বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন। এসএ গেমসে সাঁতারে ৫০ ও ১০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে স্বর্ণজয়ী মাহফুজা আক্তার শিলাকে পুরস্কার হিসেবে প্রতিশ্রুত তিন লাখ টাকা এখনও দেয়নি!
গেমসে ব্রোঞ্জজয়ীদের ১ লাখ করে টাকা দেওয়ার কথা, সেই টাকাও তারা আজও দেয় নি! এসএ গেমসের এবারের আসরে সাঁতারে বাংলাদেশ ১৫টি ব্রোঞ্জ জিতেছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতের গুয়াহাটি ও শিলংয়ে অনুষ্ঠিত এসএ গেমসে দল পাঠানোর আগে সুইমং ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিজউদ্দিন রফিজ বলেছিলেন, সাঁতারে স্বর্ণজয়ীকে নগদ ৩ লাখ টাকা, রৌপ্যজয়ীকে ২ লাখ টাকা আর ব্রোঞ্জজয়ীকে নগদ ১ লাখ টাকা দেওয়া হবে।
নিয়মানুযায়ী গেমসের পরপরই টাকা দিয়ে দিতে হয়। কিন্তু গেমস শেষ হওয়ার তিন মাস পরও প্রতিশ্রুত সেই টাকা দেওয়া হয়নি।
এসএ গেমেসে লাল-সুবজের পতাকা ওড়ানো মাহফুজা আক্তার শিলা বাংলানিউজকে বলেন, ‘এসএ গেমসে পদক পাওয়ার পরই পরই সাধারণত পুরস্কার হিসেবে প্রতিশ্রুত টাকা দেওয়া হয়। গেমস করে এসেছি অনেক দিন হয়ে গেছে। এসেই রফিজ স্যারকে টাকার কথা বলেছিলাম। স্যার বলেছেন, এখন টাকা নেই। টাকার বিষয়টি সুইমিং ফেডারশনের সভাপতি ও নৌ-বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিনকে বলা হয়েছে। তিনি বলেছেন, চলমান ট্যালেন্ট হান্টের পর টাকা দিয়ে দেওয়া হবে’।
বর্তমানে ৭-৮ কোটি টাকা ব্যায়ে ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ নামে ট্যালেন্ট হান্ট কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন ও নৌ-বাহিনী। এই ট্যালেন্ট হান্ট শেষ হবে আগামী অক্টোবরে।
সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে হতাশাও ব্যক্ত করেন শিলা।
এদিকে গেমস শেষ করে আসার পর স্বর্ণজয়ী শিলার জন্য কোনো সংবর্ধনারও আয়োজন করেনি বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন। যেটি করেছে সেটিও দায়সারা।
শিলা বলছিলেন, ‘ফেডারেশন সংবর্ধনা দেয়নি। ফেডারেশনের কম্পিউটারে যিনি কাজ করেন, তিনি তামাবিলে আমাদের রিসিভ করেছিলেন। ঢাকায় আসার পর রফিজ উদ্দিন স্যার কয়েকটি রজনীগন্ধার স্টিক দিয়েছেন’।
বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সহ সভাপতি ও এসএ গেমেসে বাংলাদেশ সুইমিং দলের ম্যানেজার মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, ‘এসএ গেমস থেকে আসার পর পদকপ্রাপ্তদের যার যা পাওনা, সেসবসহ একটি বিল সুইমিং ফেডারেশনে আমি পেশ করেছি। শিলার দাবি সত্য। এসএ গেমসে যাওয়ার আগে ফেডারেশনে আমাদের অনেকের উপস্থিতিতে রফিজ সাহেব ওই ঘোষণা দিয়েছিলেন। ম্যানেজারস রিপোর্টে আমি এটা উল্লেখ করেছি যে, পদকজয়ীরা ওই টাকাটা পাবেন। এসএ গেমস থেকে তারা ফিরেছেন এতোদিন হয়ে গেল, অথচ টাকা পাননি’।
তিনি বলেন, ‘ফেডারেশনের গত ইসি মিটিংয়ে নতুন সভাপতি নৌ-বাহিনী প্রধানকে পেলাম। ওই মিটিংয়ের এজেন্ডায় এসএ গেমসের বিষয়টা থাকা উচিত ছিল। কিন্তু সেটা ছিল না। আমরা এতো টাকা খরচ করে ট্যালেন্ট হান্ট করছি, কিন্তু ওদের টাকাটা দিতে পারছি না। বিষয়টি দুঃখজনক। তবে রমজানের আগে আরও একটি মিটিং হবে। সেখানে দেখি, বিষয়টি উত্থাপন করা যায় কি-না’।
টাকা না পেয়ে হতাশ হলেও জলকন্যা শিলা চাইছেন, ভবিষ্যতে সাঁতারে আরও ভালো কিছু করে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে। ‘সামনে জাতীয় প্রতিযোগিতা আছে। সেখানে ভালো কিছু করার চেষ্টা করছি। স্বপ্ন আছে, ভবিষ্যতে এসএ গেমসের চেয়েও ভালো কিছু করার’- বললেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৬
এএসআর