ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

৩ দিনের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি দিচ্ছে বিএনপি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৪
৩ দিনের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি দিচ্ছে বিএনপি

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দলের মূল্যায়ন, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে তিন দিনের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নামছে বিএনপি।  

আগামী বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে এ কর্মসূচি শুরু হবে, যা পরের দুদিন চলবে।

জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে এ লিফলেট বিতরণ করা হবে।  

লিফলেট বিতরণের এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দল ও দলটির আত্মগোপনে থাকা নেতা-কর্মীদের সক্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড।  

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত বিএনপির যৌথ সভায় হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে লিফলেট বিতরণের এ কর্মসূচি সফলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

যৌথ সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং কেন্দ্রীয় অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে লিফলেট বিতরণের এ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।  

৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। দলটির মূল্যায়ন ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে ‘প্রহসনমূলক ও ডামি নির্বাচন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার উদ্দেশ্য জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ছিল না। বরং নির্বাচনের নামে এটি ছিল জাতির সঙ্গে একটি সহিংস প্রতারণা, যার উদ্দেশ্য অবৈধভাবে, অনৈতিকভাবে ও অসাংবিধানিকভাবে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখা। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, ভোট ডাকাতির অভিনব সব পন্থা অবলম্বন করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে কলঙ্কিত ইতিহাস তৈরি করেছে তারই ধারাবাহিকতায় ডামি প্রার্থী, ডামি দল, ডামি ভোটার ও ডামি পর্যবেক্ষকদের সমন্বয়ে মঞ্চস্থ হয়েছে ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন। দেশব্যাপী নজিরবিহীন হুমকি-ভীতি উপেক্ষা করে ভাগবাটোয়ারার নির্বাচনে শতকরা ৫ শতাংশেরও কম ভোটার উপস্থিতি একটি সুস্পষ্ট বার্তা দেয়। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ, তথা ১২ কোটি ভোটারের প্রায় সবার এ ঐক্য মূলত জনগণের আদালতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বিচার। স্বাধীনতাকামী জনগণ সমস্বরে-প্রবলভাবে জানিয়ে দিয়েছে বিএনপি ও ৬২টি গণতন্ত্রমনা রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত সঠিক ও যৌক্তিক।

বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য গণমানুষের ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায়ের আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য মানুষের কাছে যাওয়া, মানুষকে সম্পৃক্ত করা, জনমত সৃষ্টি করা, গণতন্ত্রহীনতার যে পরিস্থিতি সেটি থেকে উত্তরণের জন্য শেখ হাসিনার অধীনে প্রহসনের ভোট বর্জন করা। বিএনপির আবেদনে সাড়া দিয়ে নির্বাচনকে বর্জন ও ফলাফলকে প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে জনগণ প্রমাণ করেছে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান গণআকাঙ্খারই প্রতিফলন। বিএনপির সঙ্গে একাত্ম হয়ে গণমানুষের এ নীরব প্রতিবাদ, এ স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন বস্তুত বিএনপির রাজনীতির সফলতা তথা বিজয়ের বহিঃপ্রকাশ।

অন্যদিকে ইলেকশনের নামে সিলেকশন নাটক মঞ্চস্থ করতে আওয়ামী লীগের যে সহিংসতা-নাশকতা, প্রকৃত কোনো বিরোধী দলীয় প্রার্থী না থাকার পরও যে অনিয়ম-কারচুপি, ভোটার উপস্থিতি বাড়িয়ে দেখানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও রাষ্ট্রযন্ত্রের যে অদ্ভূত-অবিশ্বাস্য দাবি এবং এসব ঘটনা প্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে যে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সমালোচনা-হতাশা সেখানেই আওয়ামী লীগের নৈতিক পরাজয় নিহিত। ১৫ বছর ক্ষমতা কুক্ষিগত রেখে দলীয় সাংগঠনিক প্রচেষ্টা ও রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক ক্ষমতা, তথা অবৈধ বলপ্রয়োগ করেও ন্যূনতম ভোটার জমায়েতে অক্ষম আওয়ামী লীগ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের দ্বারা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।  

জানা গেছে, নির্বাচন নিয়ে দলের এ মূল্যায়নের বিষয়টি লিফলেটে গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৪
টিএ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।