ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

এক-এগারোর মতো বিরাজনীতিকরণের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে: মঈন খান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫
এক-এগারোর মতো বিরাজনীতিকরণের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে: মঈন খান স্কুল অব লিডারশিপ আয়োজিত সংলাপে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান

এক-এগারোর মতো আবারও বিরাজনীতিকরণের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান। তিনি বলেন, এক-এগারোর নির্বাচনের মধ্যে রেজিম চেঞ্জের পরিকল্পনা ছিল।

আবার সেটাই যদি হয় তাহলে আমরা আজ ‘কেমন প্রার্থী চাই’ নিয়ে যে আলোচনা করছি, সব ভেস্তে যাবে।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘জাতীয় সংলাপ: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেমন প্রার্থী চাই’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে স্কুল অব লিডারশিপ।

মঈন খান বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের মতো ২০০৮ সালের নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন ছিল।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে যদি আমরা বিশ্বাস করি তাহলে জনগণের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। সার্বভৌমত্ব জনগণের, সরকারের নয়। যখন সরকার নির্বাচিত হয় তখন ভুল করে ভাবে তারাই বুঝি সার্বভৌমত্ব পেয়ে গেছে। সরকার ভুলে যায়, জনগণ একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দায়িত্ব দিয়েছে, পাঁচ বছর পর আবার জনগণের কাছে পরীক্ষা দিতে হবে।

সরকার নিজের কৃতকর্ম ও জনগণের ওপর আস্থা হারিয়ে নির্বাচনের বিকল্প পথের অনুষ্ঠান করে উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, পরপর তিনটি নির্বাচন ২০১৪, ২০২৮ ও ২০২৪ সালে এমন নির্বাচন হয়েছে। যার মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনার মানুষের উত্থান হয়েছিল।

গণতন্ত্রকে জবাবদিহির শাসন ব্যবস্থা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এখানে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যেমন জবাবদিহি করেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য জনগণকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। জনগণের ভোট নিয়ে নির্বাচিত হয়ে জনগণের জন্য কাজ না করলে দেশের জনগণ ক্ষমতা থেকে নামিয়ে আনে। আবার ৫০০, ১০০০ টাকা নিয়ে যে জনগণ ভোট দেয় সেই জনগণকেও জবাবদিহি করতে হয়।

শেষ পর্যন্ত জনগণের ওপর আস্থা রাখার পরামর্শ দিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, জনগণ শিক্ষিত হোক বা অশিক্ষিত হোক জনগণের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ৫ আগস্টের পরও মানুষের পরিবর্তন হয়নি। দীর্ঘদিনের কাঠামোগত প্রক্রিয়া চলে এসেছে, তার মধ্যেই রয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ১৭ বছর জনগণ ভোট দিতে পারেনি। ভোটে জনগণের প্রার্থীকে নির্বাচন ও সরকার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার করে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনতে হবে।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, রাজনীতিকরা আগামীতে সাহস দেখাতে পারবেন কি না, এখন দেখার বিষয়। যোগ্য তরুণরা আদর্শবান ও নৈতিকতায় অটুট থাকে। তাদের নেতার প্রতি আনুগত্য কম থাকে। আগস্ট অভ্যুত্থান এমন পরিস্থিতি সামনে এনেছে, যখন দলের হাইকমান্ডকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহসী হতে হবে।

স্কুল অব লিডারশিপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. গোলাম রব্বানী বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে ঘরে ঘরে নেতা তৈরি হয়েছে। তখন কাজের লোক পাওয়া যেত না, কর্মী পাওয়া যেত না। সেই অবস্থার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এখন সবাই ছাত্র-সমন্বয়ক হতে চাচ্ছে। আগস্টে একটি ভুল হয়েছে ছাত্রদের ক্লাসে ফেরানো যায়নি। এখন ছাত্ররা মনে করছে রাজনীতি করলেই সমন্বয়ক হতে পারবে, পাবে মন্ত্রীর মর্যাদা।

পরিবেশবিদ বাপ্পী সরকার বলেন, কোনো দলেই গণতন্ত্র নেই, নেই নেতা নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পথ ও পদ্ধতি। নেই নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়সীমা। এটা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে বাধা।

গণমাধ্যমকর্মী কাজী জেসিন বলেন, রাজনৈতিক দল থেকে টাকার মাস্টারি বের করে আনতে হবে। এটা করতে পারলে টাকা দিয়ে নেতা বানানোর পথ বন্ধ করে সৎ ও যোগ্য মানুষ রাজনীতিতে আসতে পারবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের ডেপুটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাদের গণি চৌধুরী, অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম মিথিল, অধ্যাপক ফরহাদ হাসান ডোনা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।