ঢাকা, সোমবার, ৯ চৈত্র ১৪৩১, ২৪ মার্চ ২০২৫, ২৩ রমজান ১৪৪৬

রাজনীতি

এনসিপির ইফতার মাহফিলে হট্টগোল-হাতাহাতি, আহত ১

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৫
এনসিপির ইফতার মাহফিলে হট্টগোল-হাতাহাতি, আহত ১

সিলেট: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ইফতার মাহফিলে নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরা ছবি-ভিডিও করতে গেলে অসদাচরণ ও ক্যামেরা কেড়ে নিতে  চেষ্টা করেন দলটির নেতাকর্মী-সমর্থকরা।

এর পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা ইফতার অনুষ্ঠান বয়কট করেন।

জানা গেছে, এনসিপির এই ইফতারে হাতাহাতি-মারামারির ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। ভুক্তভোগীর নাম শান্ত, তিনি লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী।

শনিবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় নগরের বালুচর আমানউল্ল্যাহ কনভেনশন সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইফতারের ৭/৮ মিনিট আগে মঞ্চে বক্তব্য দিচ্ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসমিন জারা। এমন সময় মঞ্চের সামনে আসন ইস্যু, বক্তৃতা দেওয়াকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণকালে ডিবিসি নিউজ, সিলেট ভিউ, খবরের কাগজ, ঢাকা পোস্টের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানালে এনসিপির নেতাকর্মীরা তেড়ে আসেন।

পরে সাংবাদিক নেতাদের হস্তক্ষেপে তারা নিবৃত্ত হন। কিন্তু ইফতার না করেই সাংবাদিকদের বড় একটি অংশ কনভেনশন সেন্টার থেকে বেরিয়ে যান। ছাত্রদের একটি পক্ষও ইফতার না করে বাইরে গিয়ে বিক্ষোভ করে দলের নেতাকর্মীদের গালিগালাজ করেন। ইফতারের পরে নেতাকর্মীরা ফের মারামারিতে জড়ান। এ সময় লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী শান্ত আহত হন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপির এক যুগ্ম আহ্বায়ক বাংলানিউজকে বলেন, বৈষম্যেবিরোধী ছাত্রদের মধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে। এরমধ্যে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা নাসির, গালিবসহ অন্তত ২৫/৩০ জন ইফতার মাহফিলে এসে হট্টগোল ও হাতাহাতি করে বেরিয়ে যায়। ইফতার পরবর্তীতেও তরা মারামারিতে জড়ায়।

তিনি আরও বলেন, ইফতারের সময় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত থাকলেও পরবর্তীতে আবারো হট্টগোল হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পর্যন্ত এমন ঘটনা চলতে থাকে বলেও জানা গেছে।

ইফতারের আগে সাংবাদিকরা এনসিপির নেতাকর্মীদের নানা প্রশ্ন করেন। এ সময় হাসনাত আব্দুল্লাহর ফেসবুক পোস্ট নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি বলেন, তিনি রাষ্ট্রের বিভিন্ন কমিটির সঙ্গে মিটিং করছেন। তার বক্তব্য স্যোসাল মিডিয়ায় আসা উচিত হয়নি। আমরা মনে করি, এটা শিষ্টাচার বহির্ভূত হয়েছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বিভিন্ন ফাংসনারি আমরা দেখছি। সেনানিবাসের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ রাজনৈতিক জায়গায় হস্তক্ষেপ করছেন। এই ধরণের হস্তক্ষেপও আমাদের কাছে কাম্য নয়।  

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক এহতেশামল হক বলেন, যারা এই আচরণ দেখাচ্ছে, তারা কুক্ষিগত করতে চাচ্ছে। তারা পাওয়ারটা এবিউজ করতে চায়, বক্তৃতা দিতে চায়। এনসিপির নামে তারা চাঁদাবাজি করতে চায়।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম করে উচ্ছৃঙ্খল মানুষ হট্টগোল করার চেষ্টা করে। মেহমান সাংবাদিকদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করে। এটার দায় এড়াতে পারি না। জুলাই বিপ্লবকে পুঁজি করে যারা শক্তি প্রদর্শন ও চাঁদাবাজি অন্যায় সুযোগ নিতে চায়, তাদের কোনো স্থান এনসিপিতে হবে না। তাছাড়া যারা ছাত্র, দারা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদে যোগদান করতে পারে। আর পড়াশোনা শেষ করে এনসিপিতে যোগদান করতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৫
এনইউ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।