ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি মহান স্বাধীনতার চেতনাকে শেষ করে দিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে উল্লেখ তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই। তারা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
শনিবার (১৫ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘শান্তি ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ধর্মাশ্রয়ী জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও নাশকতা রুখে দাঁড়ান’ শীর্ষক এ সভায় সভাপতিত্ব করেন ইনু।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠন করতে হলে খুনি-জঙ্গি উৎপাদনকারী নেতৃত্ব, খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব, স্তব্ধ করে দিতে হবে। এ ধরনের নেতৃত্ব উৎখাত করতে হবে। জঙ্গি-খুনি সরবরাহকারী জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
হাসানুল হক ইনু বলেন, জঙ্গি নেতৃত্ব আর জঙ্গি সরবরাহকারীদের উৎখাত করা গেলেই বাংলাদেশ তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। অসাম্প্রদায়িক ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন সহজ হবে। স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ যে পথে চলার কথা সে পথেই চলবে। জঙ্গি-খুনি উৎখাতের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে কোনো দোদুল্যমানতা থাকলে জাসদের নেতাকর্মীদেরই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দায়িত্ব নিতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদকে উৎখাত করা না গেলে উন্নয়নের ধারা ব্যাহত হবে। আর বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও ডিজিটাল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিপ্লবী নেতৃত্বের পক্ষেই সম্ভব। তাই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের স্থায়িত্ব বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে সকলকে সহযোগিতা করতে হবে।
পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র এখনও থেমে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই চক্রকে উৎখাত করা না গেলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব, মুক্তিযুদ্ধ বা দেশ কোনোটিই নিরাপদ বোধ করবে না। এরা হয়তো এখন কোনো কারণে কোণঠাসা হয়ে আছে। তবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরাজিত শক্তি স্বাধীনতার চেতনাকে শেষ করে দিতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। এরপরও তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি। শাহ এ এম এস কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যা করে। শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে তার জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালায়। এসবই তাদের ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা।
জাসদ সভাপতি বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি একসময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিলীন করে জঙ্গিবাদ উস্কে দিয়ে পাকিস্তানি চেতনা প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা করে। তারা দেশে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও অগ্নি-সন্ত্রাসের ত্রাস সৃষ্টি করে। সেই অবস্থা থেকে টেনে এনে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে তুলেছেন। এ পথচলা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তাদের রাজনীতি ছিল গোঁজামিলতন্ত্রের, সামরিকতন্ত্রের আর ষড়যন্ত্রের। এখন দেশে পুরো গণতন্ত্র চলছে। আবার দেশে সেই গোঁজামিলতন্ত্র-সামরিকতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্রকারীদের উৎখাত করতে হবে, তাদের রুখে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর চার মূলনীতি-জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা- এর ওপর ভিত্তি করে দেশকে দাঁড় করাতে হবে। ঘাপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের উৎখাত করতে হবে। ষড়যন্ত্রকারী বিএনপিকে স্তব্ধ করে দিতে হবে। তবেই বাংলাদেশ সঠিক পথে এগিয়ে যেতে পারবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া, সহ-সভাপতি মীর হোসেন আখতার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৫
এমএম/এইচএ/