ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৫
ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান

ঢাকা: স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুপক্ষ যাতে কোনো আঘাত করতে না পারে সেজন্য দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তারা বলেছেন, ষড়যন্ত্র এখনও চলছে।

ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয়। সুযোগ পেলেই তারা সাপের মতো ছোবল মারতে পারে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় নেতারা এসব কথা বলেন। ৪০ দিনব্যাপী কর্মসূচির শেষ দিনে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ।

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, কোনো শত্রুপক্ষ আমাদের যাতে আঘাত না করতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

তিনি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি জাতির জনককে হত্যার পর মনে করেছিল, বঙ্গবন্ধুর রক্ত আর কথা বলবে না। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে আমরা পরাজিত করেছি। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র করতে।

১৯৮১ সালে যখন আমরা জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করি, তখনই পরাজিত শক্তির প্রথম পরাজয় হয়। এরপর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে যখন জাতির জনকের হত্যার বিচার করেছি, খুনিদের ফাঁসি হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হলো, তখন তাদের আরেকটি পরাজয়।

শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফাঁসিই হয়নি, তাদেরকে আমরা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করেছি বলেও মন্তব্য করেন আমু।

তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ঠেকানোর নামে বাসে পেট্রোল বোমায় ঘুমন্ত মানুষ হত্যা, নির্বাচন বানচাল করে তারা দেশে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি করতে চেয়েছিল। আবার ২০১৫ সালে একই ঘটনা ঘটায়। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচন হয়েছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে চলেছে। কোনো শত্রুপক্ষ যাতে আঘাত করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, আজ আয়লানকে দেখে বিশ্ব বিবেক লজ্জিত, স্তম্ভিত হয়। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট যখন শিশু রাসেল, সুকান্ত বাবুকে হত্যা করা হয় তখন খুনিরা বিশ্ব বিবেককেও স্তব্ধ করে  রেখেছিলো।

খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া শুধু ষড়যন্ত্র আর ধ্বংসের রাজনীতি করেন। তাই তার ডাকে আজ মানুষ আসে না। আওয়ামী লীগ ন্যায় ও সত্যের পথে থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আরো বরণীয় হচ্ছে আর খালেদা জিয়া পরিত্যক্ত হচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমরা এ দেশে বিরোধ করতে চাই না। অনেক হানাহানি হয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের সময় যেভাবে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, আমরা চাই জাতি আবারও সেইভাবে ঐক্যবদ্ধ হোক।   জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ছিলেন ঐক্যের প্রতীক। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ জাতির পিতার শাহাদাৎ বার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালন করেছে। আশা করি, এমন সময় আসবে যখন সকল দলের নেতাকর্মীরা একসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন করবেন।  

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মিজানুর রহমান বলেন, এমাজউদ্দিন আহমদ লিবিয়ার ত্রিপোলিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আজ আমি এ কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি।

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস এবং পাকিস্তানের ভাবধারা প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা হয়েছিলো। সেই ষড়যন্ত্র এখনও আছে। ষড়যন্ত্রকারীরা আজও সক্রিয়।

তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক লবিস্ট নিয়োগ করেছে। এটা করে তারা প্রমাণ করেছে, তারা জনগণের সমর্থন হারিয়ে বিদেশি প্রভুদের ওপর ভর করেছে। আরেকদিকে তারা জঙ্গিবাদের ওপর ভর করেছে।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বুঝতে পেরেছেন, তার জনবিরোধী কর্মকাণ্ডে তিনি জনগণের সমর্থন্ হারিয়েছেন। তাই বিদেশি প্রভু ও জঙ্গিবাদের ওপর ভর করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদের যেকোনো ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে হবে এটাই আজকের দিনের অঙ্গিকার।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, পরাজিত শক্তি তাদের পরাজয়ের গ্লানি ভোলে না। তারা সুযোগ পেলে সাপের মতো ছোবল মারে। কোনো পরাজিত শক্তি যাতে সাপের মতো ছোবল মারতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকতে হবে। শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে হবে। শেখ হাসিনাকে রক্ষার জন্য পাহারা দিতে হবে। শেখ হাসিনা বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ থাকবে, দেশে আইনের শাসন থাকবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের শেখ বজলুর রহমান, মুকুল চৌধুরী, কামাল আহমেদ মজুমদার, শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৫
এসকে/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।