ঢাকা: লন্ডনে চিকিৎসা শেষে আগামী ৭ নভেম্বরের আগেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দেশে ফিরে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে আয়োজিত দলীয় কর্মসূচিতেও খালেদা অংশ নেবেন বলে জানান তিনি।
শনিবার (২৪ অক্টোবর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব তথ্য জানান।
এর আগে নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যৌথসভা করেন তিনি।
সভা শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘অনেক পত্রিকায় নিউজ এসেছে, খালেদা জিয়া আর ফিরবেন না। কিন্তু দেশের বাইরে তার কোনো স্থাপনা নেই, প্রতিষ্ঠান নেই বা কোনো আত্মীয়-স্বজনও নেই। কাজেই দেশের বাইরে থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না। ’
‘একটি চক্রান্তের অংশ হিসেবে এসব করা হচ্ছে’ বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়া চোখের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য গেছেন। এখন পায়ের চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। চিকিৎসা শেষে ডাক্তার ছাড়পত্র দিলেই তিনি দেশে চলে আসবেন এবং খুব দ্রুতই আসবেন। আশা করি, ৭ নভেম্বরের আগেই দেশে ফিরবেন তিনি। ’
শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) দিনগত রাতে পুরান ঢাকায় হোসেনী দালানে শিয়া সম্প্রদায়ের ওপর বোমা হামলার বিষয়ে ফখরুল বলেন, আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি করছি।
তিনি বলেন, দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার তদন্তের আগেই বলে দিলো, এটি বিএনপি-জামায়াত করেছে। বিএনপিকে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে কোনো দলের সঙ্গে ব্রেকেটে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে প্রমাণ করতে চায় সরকার। কিন্তু স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বিএনপি কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বা জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক দল। কোনো জঙ্গিবাদের সঙ্গে এ দলের সম্পৃক্ততা নেই। বিএনপি আইনের শাসন ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। কেননা, এ দলটির মাধ্যমেই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
‘বিএনপিকে সরকার নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূল করে দিতেই বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপিকে জড়াচ্ছে সরকার। কিন্তু এ দলকে নিশ্চিহ্ন, নির্মূল করা যাবে না। তার কারণ বিএনপির সঙ্গে জনগণ রয়েছে,’ যোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, অনুমান নির্ভর কোনো নিউজ করবেন না। প্রয়োজনে নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন। আমরা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবো।
১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা
সংবাদ সম্মেলনে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে দেশব্যাপী ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, আগামী ৫ নভেম্বর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী বিএনপির অঙ্গ সংগঠন রক্তদান কর্মসূচি, পোস্টার-ক্রোড়পত্র প্রকাশ, আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ৭ নভেম্বর উদযাপন করা হবে।
এর মধ্যে ৭ নভেম্বর দিনটিতে সকাল ৬টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। ১০টায় জিয়াউর রহমানের সমাধিতে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ফুল দেওয়া, সূরা ফাতেহা পাঠ করা হবে।
এছাড়া সারাদেশে অঙ্গ সংগঠনগুলোর উদ্যোগে দিনব্যাপী নানা আয়োজন থাকছে। পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে ৮ নভেম্বর।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৫, আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা
ইইউডি/আইএ/এমএ