ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ব্লগার-প্রকাশক হত্যাকাণ্ড

‘সন্দেহের শীর্ষে বিএনপি-জামায়াত’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৫
‘সন্দেহের শীর্ষে বিএনপি-জামায়াত’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ব্লগার-প্রকাশক হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার পেছনে সন্দেহের তালিকায় বিএনপি-জামায়াত শীর্ষে রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
 
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের বক্তব্য ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতির মাধ্যমে বোঝা যায়, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত! এসব হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে সন্দেহের যে তালিকা রয়েছে, এতে বিএনপি-জামায়াতের নেতারা শীর্ষে।


 
বুধবার (০৪ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধানমণ্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে ‘৭২ এর সংবিধান: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মৌলবাদ সন্ত্রাস নির্মূলের ব্যবস্থাপত্র’ শীর্ষক আলাচনা সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
 
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এ আলোচনার আয়োজন করে।
 
ব্লগার-প্রকাশক হত্যাকাণ্ডে বিএনপি-জামায়াতের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার আইনগত ভিত্তি রয়েছে মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের হামলার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের স্বার্থ রয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা চাইলে এসব ঘটনার সঙ্গে জামায়াত-বিএনপির কানেকশনের বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়া যাবে।
 
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত এ ধরনের যতোগুলো হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেগুলোর মধ্যে ব্লগার রাজীব হত্যার অভিযোপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আগামী ৮ নভেম্বর থেকে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর প্রতিদিন এর শুনানি হবে। ব্লগার রাজীব হত্যার বিচার চলতি মাসের মধ্যে শেষ করার সম্ভাবনার কথাও জানান আইনমন্ত্রী।
 
আনিসুল হক আরো বলেন, এ সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধে দল হিসেবে জামায়েতের বিচার চায়, সরকারই জামায়াতের বিচার করবে। জামায়েতের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করে মন্ত্রিসভায় পাঠানো হয়েছে। আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আইনটি মন্ত্রিসভায় পাস হবে বলেও জানান তিনি।
 
মন্ত্রী বলেন, সরকার ১৯৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যেতে চায় এবং বাহাত্তরের সংবিধানে এই সরকারই ফিরে যাবে।
 
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, দেশে মুক্তচিন্তার মানুষদের হত্যা করা হচ্ছে। এ সময়ে প্রশাসনের নির্লিপ্ততা দেখছি। প্রশাসনের ভেতরেও কী এমন কেউ লুকিয়ে আছে, যারা মুক্তচিন্তার লোকদের হত্যায় মদদ দিচ্ছে? যদি এমন কেউ থেকে থাকে তাহলে তাদেরকে খুঁজে বের করার আহ্বানও জানান তিনি।
 
বিচার না চেয়ে দীপনের বাবার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফের বক্তব্যকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, রাজনীতিকদের বিভ্রান্তিকর, লজ্জাজনক এমন বক্তব্যের নিন্দার ভাষা আমাদের নেই। ক্ষমতা মোহ বেশি হলে এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেন তারা।
 
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নতুন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের নজির সৃষ্টি করছে দাবি করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, দ্রুততম সময়ে মানবতাবিরোধীদের বিচারের দাবির মধ্যে ট্রাইব্যুনাল দু’টি থেকে একটিকে নিষ্ক্রিয় করা কতোটুকু যৌক্তিক, রাষ্ট্রকে একদিন এর জবাব দিতে হবে।
 
সংবিধান দিবস উপলক্ষে তিনি বলেন, আজ সংবিধান দিবস রাষ্ট্র পালন করার যোগ্যতা রাখে না। যোগ্যতা তখনই রাখতো, যদি এই সংবিধান বাহাত্তরের সংবিধান থাকতো। এ সংবিধান গোঁজামিলের সংবিধান বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
 
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিরি উপদেষ্টা বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য দেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
 
সভায় মধ্যে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত, প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৫
টিএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।