ঢাকা: সংবিধানে আদিবাসীদের অধিকার রক্ষা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-তে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেনন বলেন, সংবিধানে আদিবাসীদের অধিকার রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তাদের বাঙালি নামে অভিহিত করা হচ্ছে। ডিসি-এসপিদের আদিবাসী নামকরণের কোনো অনুষ্ঠানে যোগদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আদিবাসী শব্দ ব্যবহার করলে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। সংবিধান সংশোধনের সময় এ ভুল ঠিক করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু হয়নি।
‘এ ভুলের বোঝা বয়ে বেড়াতে হচ্ছে এখনও। মুক্তিযুদ্ধে পাহাড়ি বাঙালি এক থাকলেও পরবর্তীতে আমরা তা ধরে রাখতে পারছি না। তাদের আমরা বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছি। ’
ব্লগার হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, অভিজিৎ এর বইয়ে অবিশ্বাসের কথা থাকলেও ইসলামকে অপমানের কথা নেই। কিন্তু অভিজিৎকে হত্যা করা হয়েছে। দেশে আইএস এর কোনো অস্তিত্ত্ব নেই। পাহাড়ি-বাঙালি একসঙ্গে দেশের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে হবে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেন, আদিবাসীরা এখন নিজের পরিচয় নিয়ে বাঁচতে পারছে না। বাঙালি বলার মাধ্যমে আদিবাসীদের নাগরিকত্বও হরণ করা হয়। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি রয়েছি আমরা কিছুতেই এটি মেনে নিবো না। এখনও পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। আমার দাবি, অতি সত্বর শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়।
সিপিবি’র মঞ্জুরুল আহসান খান বলেন, সংবিধানের কলমের খোঁচায় আদিবাসীদের বাঙালি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটি ঠিক নয়। এতে আদিবাসীদের অধিকার নষ্ট করা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস এম এন লারমার মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির পক্ষে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান।
তিনি বলেন, এম এন লারমা শুধু আদিবাসী নেতাই ছিলেন না, তিনি একজন জাতীয় নেতাও বটে। তাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে এম এন লারমা সড়ক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক।
কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নামে একটি ভিত্তিপ্রস্তর তৈরির দাবি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৫
ইউএম/এসএস