ঢাকা: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ মিলনায়তনে ‘মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, পৌরসভায় যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তো বিএনপি ৮০ শতাংশ ভোট পাবে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিজেও জানেন না তাদের নৌকা ডুবতে বসেছে।
তিনি মন্তব্য করেন, সেনাবাহিনীর প্রতি তাদের (আওয়ামী লীগ) আস্থা নেই বিধায় নির্বাচনে তারা সেনা মোতায়েন করতে চাচ্ছেন না। আজকে লজ্জা হয় যে বিভিন্ন নির্বাচনে নির্বাচিতরা বরখাস্ত আর অনির্বাচিতরা দেশ চালাচ্ছেন। তবে দ্রুতই এসবের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ জেগে উঠবে এবং দেশের এমন চেহারা পরিবর্তন হবেই।
আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের দল নয় মন্তব্য করে খালেদা বলেন, তারা শুধু মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, তাদের দলে কোনো মুক্তিযোদ্ধা নেই। তাদের দেশের প্রতি কোনো মায়াও নেই। ১৯৭১ সালে তারা স্বাধীনতা চাননি, চেয়েছিলেন কেবল ক্ষমতা। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। আজকেও এই দল আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র চায় না, ক্ষমতা চায় শুধু। এ জন্য জোর করে ক্ষমতা ধরে বসে আছে।
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, সেনাবাহিনীকে আওয়ামী লীগ আজকে নয়, অনেক আগেই ধ্বংস করতে চেয়েছিল। সেনাবাহিনীর ওপর কোনো বিশ্বাস নেই তাদের।
তিনি উদাহরণ দেন, বিডিআর বিদ্রোহের। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে রক্ত বলেও মন্তব্য বিএনপি নেত্রীর। বলেন, আল্লাহ এর বিচার করবেন। তিনি তরুণদের ’৭১’র মতো জেগে ওঠার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, যত অন্যায় করেছেন সব শেখ হাসিনা। প্রশাসন-পুলিশ-সেনাবাহিনী কারোই কোনো অন্যায় নেই। তাদের কিছু হবে না। কারো চাকরি যাবে না বিএনপি ক্ষমতায় গেলে। জেলে গেলে শেখ হাসিনাকেই যেতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবখানে যোগ্য-মেধাবী অফিসারদের মূল্যায়ন করা হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান সরকার দেশটাকে লুটপাট করে খাচ্ছে। নিজেরাই কামড়াকামড়ি করছে। সুইস ব্যাংকে ২০০৮ সালের পর থেকে কারা টাকা পাঠিয়েছে এ প্রশ্ন রাখেন তিনি।
স্বপ্নের পদ্মাসেতু স্বপ্নই থেকে যাবে মন্তব্য করে বিএনপি নেত্রী আরও বলেন, তবে পদ্মাসেতু হবে, দৌলদিয়া-পাটুরিয়া দিয়েও সেতু হবে। সেতু বাস্তবায়নের মানুষ এ দেশে আরও আছে।
পৌর নির্বাচনে আইন ভঙ্গ হচ্ছে অভিযোগ করে খালেদার মত, প্রধানমন্ত্রী নিজেই এবং তার দলের লোকরা প্রতিদিনই আইন ভঙ্গ করছেন। এই বোবা-অযোগ্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না তাতে। এ জন্য চাই সেনা মোতায়েন। পুলিশের বা প্রশাসনের সব লোক খারাপ না, কিছু দুষ্টু লোকের জন্য এই অবস্থা হচ্ছে। তাই তো সেনা মোতায়েনের দাবি করছি।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ উদ্দিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি ফজলুর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
এমএম/আইএ
** মুক্তিযোদ্ধা দলের মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ চলছে