ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

গুইমারা উপজেলা নির্বাচন

লড়াই যখন জাতীয় বনাম আঞ্চলিক দল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৬ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৭
লড়াই যখন জাতীয় বনাম আঞ্চলিক দল লড়াই যখন জাতীয় বনাম আঞ্চলিক দল-ছবি: বাংলানিউজ

খাগড়াছড়ি: গুইমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে সোমবার (০৬ মার্চ)। তবে ভোটের উম্মাদনা যাকে বলে তেমন কিছু চোখে পড়ছে না গুইমারায়। অথচ খাগড়াছড়ির নবম উপজেলা হিসেবে নতুন গুইমারা উপজেলা পরিষদে এবারই প্রথম নির্বাচন হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ-বিএনপি ছাড়াও স্বতন্ত্রের ব্যানারে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থিত এক প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে দাঁড়িয়েছেন। প্রচারণা শুরু হলেও মাঠে ময়দানে উ‍ৎসবের আমেজ ছড়ায়নি।

নানা ধরনের সমীকরণের কারণে ভোটারদের মধ্যে উদ্দীপনা কম।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃত্বের প্রচেষ্টায় উপজেলা ঘোষণার মাত্র দেড় বছরের মাথায় নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ পেতে যাচ্ছেন পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির গুইমারার বাসিন্দারা। সে হিসেবে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার কথা থাকলেও তার রেশ দেখা যায়নি।

অবশ্য সাধারণ ভোটাররা জানিয়েছেন, তারা এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করতে চান। সৎ, যোগ্য ও ভালো মানুষকেই বেছে নেবেন ভোটাররা।

তিন উপজেলা থেকে তিনটি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত নতুন উপজেলা গুইমারা উপজেলা নির্বাচন তাই বেশ জটিল হয়ে উঠেছে। মূলত বিএনপি এবং ‘স্বতন্ত্র’পরিচয়ে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ‘ইউপিডিএফ’ সমর্থিত প্রার্থীর পাহাড়ি-বাঙালি সমীকরণের ভোট কিছুটা হলেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে। অবশ্য উপজেলা ঘোষণা ও এলাকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি এবং ক্লিন ইমেজের কারণে বিশেষ সুবিধাও পেতে পারেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী মেমং মারমা।

এদিকে, দুর্গম পাহাড়ি গ্রামে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন নৌকার প্রচারণায় বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠলেও ধানের শীষ প্রার্থীর এখনও অভিযোগ নেই।

অপরদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা নির্বাচনকে অবাধ করতে নয়া নির্বাচন কমিশনের সহায়তা কামনা করেন।

গুইমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনজন চেয়ারম্যান, দু’জন নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও চারজন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২ জুন গুইমারাকে উপজেলা ঘোষণা করে সরকার। এখানে জেলার রামগড় উপজেলার হাফছড়ি, মহালছড়ি উপজেলার সিন্দুকছড়ি ও মাটিরাঙ্গা উপজেলার গুইমারা ইউনিয়ন নিয়ে গুইমারা উপজেলা গঠিত হয়। গুইমারায় ২৭ হাজার ৯৯২ জন ভোটার রয়েছেন।

গুইমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেমং মারমা বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে গুইমারা উপজেলা ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীতে আম‍ূল পরিবর্তনের হাতছানি অপেক্ষা করছে। আমার বিশ্বাস, ভোটাররা নতুন উপজেলার উন্নয়নের জন্য আমাকে নির্বাচিত করবে।

চেয়ারম্যান পদে বিএনপির প্রার্থী মো. ইউছুপ বাংলানিউজকে বলেন, আমি ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। তারা আমাকে আশাবাশী করছে। আমার বিশ্বাস অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমার জয় নিশ্চিত।

ইউপিডিএফ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে সরকারি বাহিনীর লোকজন বাইরে থেকে বহিরাগত এনে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করতে পারে। যেহেতু নতুন নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে এ নির্বাচন। তাই আমি আশাবাদী, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন হবে। আর ভোটাররা যদি নিজের মতামত সঠিকভাবে দিতে পারে তাহলে আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবো।

অবশ্য নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবেই প্রচারণা চলছে। তবে কিছু কিছু অভিযোগ এলেও তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গুইমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এটিএম কাউছার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় নির্বাচনের জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৭
আরবি/আইএ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।