ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

তিস্তার পানি পেতে জাতিসংঘে যান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭
তিস্তার পানি পেতে জাতিসংঘে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর/ছবি: শাকিল

ঢাকা: তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর ন্যায্য হিস্যার দাবি আদায়ে জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।


 
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের একটা কথা সব সময় মনে রাখতে হবে যে, আমাদের প্রয়োজন মেটাতে হবে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা পানি আনতে ব্যর্থ হয়েছেন, দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই অবিলম্বে তিস্তা নদীর পানি এবং ৫৪টি অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবি জাতিসংঘে তুলে ধরুন এবং সমস্যা সমাধানে তাদের সম্পৃক্ত করুণ। কারণ আমরা কোনো দয়া চাই না, এটা আমাদের ন্যায্য অধিকার।
 
তিনি বলেন, আজকের এই মানববন্ধন এটাই প্রমাণ করেছে দেশের মানুষ তাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো দিন আপোস করবে না। একটি কথা আমরা (বিএনপি) পরিষ্কার করে বলতে চাই- বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে আমরা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম। কারো দয়ায় এই স্বাধীনতা পাইনি। আমাদের স্বাধীনতা এসেছে লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে, মা-বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে। আমরা দীর্ঘ ৯ মাস লড়াই করে এ বাংলাদেশকে মুক্ত করেছি। আর সেই মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা আজকে স্বাধীনতার ৪৬ পরে সেই গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রকে হরণ করা হয়েছে।
 
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়ে অনেকগুলো চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষার করে এসেছেন। কিন্তু আমাদের লাখো মানুষের প্রাণের দাবি সেই তিস্তা পানির তিনি (প্রধানমন্ত্রী) চুক্তি করতে পারেনি। শুধু তিস্তা চুক্তিই নয়, অভিন্ন ৫৮টি নদীর ন্যায্যা হিস্যার কোনো চুক্তি করতে পারেননি। অথচ গত কয়েক বছর ধরে তারা যে বিষয়গুলো ছিল বাংলাদেশের জন্য ট্রাম্পকার্ড, যা ছিল বাংলাদেশের জন্য ধরকষাকষি বিষয়গুলো, সেগুলো তিনি (প্রধানমন্ত্রী) অবলীলায় ভারতের কাছে তুলে দিয়ে এসেছেন। ট্রানজিট দিয়েছেন, ব্যবসা বাণিজ্যর সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন অথচ আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি। শুধু  আশ্বাস পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে ফিরে এসে বলেছেন- পানি ম্যাংগা, ইলেক্ট্রিসিটি মিল্যা-কুছ তো মিল্যা। অর্থ্যাৎ আমাদের অবস্থা হয়েছে কুছ তো মিল্যা।
 
তিনি বলেন, সম্প্রতি নেত্রকোনায় গিয়ে দেখে এসেছি উজান থেকে অসময়ে পানি এসে বন্যায় ব্যাপক ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ফসল তলিয়ে গেছে। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে আমাদের কোনো চুক্তি নেই। তাই যখন বন্যা হয় তখন ভারত বাঁধগুলো খুলে দেয়, আমরা বন্যায় ভেসে যাই।
 
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যে আন্দোলন চলছে সেটা কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য নয়। এই আন্দোলন মানুষের অধিকার আদায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন। তাই আমরা সরকারকে উদ্দেশ্য করে আবারও বলছি- আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হউক। নির্বাচন দিন। সেই নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে। কারণ আজকে গোটা বাংলাদেশের মানুষ একটা কারাগারের মধ্যে পড়ে গেছে। সেই কারাগার থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। তাই জনগণকে আহ্বান করবো আসুন- আমাদের ন্যায্য অধিকার আদায় ও রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হই।
 
আয়োজক সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি হাজী আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক  লে. কর্নেল (অব) জয়নুল আবেদীন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭
এজেড/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।