ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ভাঙনের শঙ্কায় মওদুদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৮ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
ভাঙনের শঙ্কায় মওদুদ সেই বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ- ছবি ফাইল ফটো

ঢাকা: গুলশান এভিনিউ’র ১৫৯ নম্বর বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হবার পর খুব বেশি দূরে যান নি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এ বাড়ির পেছনে ৫১ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর হোল্ডিংয়ে ‘কনকর্ড প্যানারোমা’র ৫ম তলার ৫০৬ ফ্ল্যাটে উঠেছেন তিনি।

সাড়ে তিন দশক (৩৬ বছর) ধরে যে বাসায় বসবাস করেছেন, এতো সহজেই সে বাসার মায়া ছাড়তে পারছেন না সাবেক এই উপ-রাষ্ট্রপতি।
 
সে কারণেই হয়তো উচ্ছেদ হবার পরের দিনই হাই কোর্টে রিট করেছিলেন বাড়ি ফিরে পাওয়ার জন্য।

গুলশান ২ নম্বর সার্কেলের ৮৪ নম্বর সড়কে নিজের আরেকটি ফ্ল্যাট থাকা সত্ত্বেও হারানো বাড়ির পেছনে ৫১ নম্বর সড়কে আত্মীয়র ফাঁকা ফ্ল্যাটে উঠেছেন মওদুদ।
 
সাড়ে তিন হাজার স্কয়ার ফিটের এই ফ্ল্যাটে উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবার অনায়াসে কাটিয়ে দিতে পারে। কিন্তু সব সরকারের আমলে মন্ত্রিত্ব করা সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি মওদুদ আহমদের পক্ষে সুবিস্তৃত বাগান বাড়ি ছেড়ে চার বেডরুমের ফ্ল্যাট বাড়িতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া কঠিন বৈকি!
 
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ভাঙনের শঙ্কা। আইনি লড়াইয়ে হেরে দীর্ঘ ৩৬ বছরের স্মৃতি-বিজড়িত যে বাড়ি থেকে তিনি উচ্ছেদ হয়েছেন, সেই বাড়ি যে কোনো মুহূর্তে বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিতে পারে কর্তৃপক্ষ-এমন শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ!
 
সম্প্রতি বর্ষীয়ান এই আইনজীবীর একজন জুনিয়র বাংলানিউজকে বলেন, এই মামলার কোথাও বলা হয়নি বাড়িটির মালিক রাষ্ট্র। সুতরাং বাড়ির মূল মালিক অস্ট্রিয়ার নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের উত্তরসুরিদের সঙ্গে সমঝোতা বা আইনি বোঝাপড়ার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। তার আগেই বাড়িটি ভেঙে ফেলা হতে পারে অথবা এর অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনা হতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বাড়িটি নিয়ে কর্তৃপক্ষের দু’রকম `চিন্তার’ কথা জানতে পেরেছেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। প্রথমত, ডুপ্লেক্স বাড়ির একতলা বিল্ডিংটি ভেঙে ফেলে অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনতে পারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দ্বিতীয়ত বাড়ির মাঝ খানের দেওয়াল ভেঙে গুলশান থানার বর্ধিত অংশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে পুলিশ।
 
যেটিই করা হোক, দখল সূত্রে মওদুদ আহমদের ৩৬ বছরের মালিকানার ভিত এতে নড়বড়ে হয়ে পড়বে। পরবর্তী আইনি লড়াই’র ক্ষেত্র নিজের জন্য দুর্বল হয়ে যাবে-এমনটিই ভাবছেন সাবেক এই আইনমন্ত্রী।
 
সূত্রমতে, মওদুদ আহমদের এখন একটিই চাওয়া বাড়ি ফিরে পাওয়ার জন্য আদালতে যে রিট তিনি করেছেন, তা নিষ্পত্তি না হওয়া পযর্ন্ত যেন বাড়ির অবকাঠামোগত কোনো পরিবর্তন যেন না করে সরকার।
 
কিন্তু ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের এই চাওয়া পূরণ হওয়ার সম্ভবনা খুব কম দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, রাজউক ও সরকারের বিরুদ্ধে আদালতের সমন জারির পর পরই বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হয়েছেন মওদুদ।
 
যেখানে ১৯ জুলাই’র মধ্যে সরকার ও রাজউককে বলা হয়েছিলো নোটিশের জবাব দিতে, সেখানে উল্টা বাড়ি থেকে বেড় করে দেওয়া হয়েছে ডাকসাইটে এই রাজনীতিবিদকে। সুতরাং তার করা রিটের নিষ্পত্তি হওয়া পযর্ন্ত বাড়ির অবকাঠামোগত পরির্তনে সরকার অপেক্ষা করবে-এমনটি ভাবার কারণ নেই।
 
তবে বাড়ি ভাঙার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত রাজউক’র কাছে উচ্চ পর্যায় থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি বলে জানা গেছে। রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, বাড়িটি এখন রাজউকের নিয়ন্ত্রণে আছে। এটি ভেঙে ফেলা বা অবকাঠামোগত কোনো পরিবর্তনের নির্দেশনা আমরা পাইনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘ্ণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
এজেড/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।