ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

শূন্য পদে নিয়োগ দিতে ভুলে গেছে বিএনপি!

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০০ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০১৭
শূন্য পদে নিয়োগ দিতে ভুলে গেছে বিএনপি!

ঢাকা: বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির তিনটি পদসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ এখনো ফাঁকা রয়েছে। জাতীয় কাউন্সিলের ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পযর্ন্ত এসব পদে কাউকে নিয়োগ দেননি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।  

পদপ্রত্যাশী ‘ক্ষুব্ধ’ নেতারা বলছেন, শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি বেমালুম ভুলে বসে আছেন দলের চেয়ারপারসন। আর শীর্ষ নেতারা বলছেন, শূন্য এ পদগুলো পূরণের এখতিয়ার দলীয় প্রধানের।

তিনি যখন চাইবেন তখন শূন্য পদে লোক নিয়োগ দেবেন।

গত বছর ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিলের সাড়ে চার মাস পর ৬ আগস্ট গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদ শূন্য রেখে বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

এতে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় স্থায়ী কমিটির ২টি পদ খালি রেখে ১৭টি পদের নাম ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার ৫০ দিনের মাথায় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ মারা যান।

প্রবীণ এই নেতার আকস্মিক মৃত্যুতে স্থায়ী কমিটির শূন্য পদের সংখ্যা এখন তিনটি। এই তিন পদের বিপরীতে প্রায় হাফ ডজন প্রবীণ নেতার নাম উচ্চারিত হচ্ছে গত এক বছর ধরে।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান বর্ষীয়ান রাজনীতিক শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, সাদেক হোসেন খোকা, সেলিমা রহমান এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান- এই ছয় জনের মধ্যে যে কোনো তিন জন নিয়োগ পেতে পারেন স্থায়ী কমিটির তিনটি শূন্য পদে।

সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের মৃত্যুতে ৭৩ সদস্য বিশিষ্ট বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের একটি পদ ফাঁকা পড়ে আছে দীর্ঘ দিন ধরে। এ পদে আগ্রহী প্রার্থীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। কিন্তু নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে দলের চেয়ারপারসনের কোনো ‘গরজ’ লক্ষ্য করছেন না পদপ্রত্যাশী নেতারা।

জাতীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণার সময় যুব বিষয়ক সম্পাদক পদটি ফাঁকা রাখেন খালেদা জিয়া। সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজকে নিয়োগ দেওয়া হলেও যুব বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে কাউকে নিয়োগ দেননি বিএনপি প্রধান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এ পদের জন্য স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা বিএনপির সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমউদ্দিন আলম একজন আগ্রহী প্রার্থী। তার ব্যাপারে খালেদা জিয়ারও ইতিবাচক মনোভাব আছে। কিন্তু কবে নাগাদ শূন্য পদটি পূরণ করা হবে, সেটি কেউ বলতে পারছেন না।
ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও সহ সম্পাদক পদ দু’টিও খালি পড়ে আছে। গত কমিটিতে পদ দু’টিতে ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক দুই সভাপতি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এবং সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু।
 
বর্তমান কমিটিতে এ্যানি প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু হয়েছেন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও সহ সম্পাদকের পদ দু’টি রয়েছে শূন্য।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক ৭টি পদের মধ্যে ২টি পদ এখনো শূন্য রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার সময় এ দু’টি পদ শূন্য রাখা হয়। এর পর প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও এ পদ দু’টিতে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

বিএনপির শীর্ষ পযায়ের এক নেতা সম্প্রতি বাংলানিউজকে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক বিষয়ক সম্পাদক পদে নিয়োগের বিষয়টি তারেক রহমান দেখভাল করেন। তিনিই এ পদে সরাসরি নিয়োগ দেন। এখানে অন্য কারো কিছু করার নেই।

এ ছাড়া সম্প্রতি বিএনপির রাজনীতি থেকে কর্নেল (অব.) এম. আনোয়ারুল আজিম পদত্যাগ করায় সাংগঠনিক সম্পাদকের (কুমিল্লা বিভাগ) একটি পদ খালি হয়েছে। পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোজাহার হোসেনের মৃত্যুতে শূন্য হয়েছে জাতীয় নির্বাহী কমিটির একটি সদস্য পদ।

এভাবে নানা কারণে শূন্য হওয়া পদগুলোতে দ্রুত নেতা নিয়োগের কোনো আভাস মিলছে না বিএনপিতে। উপ কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও তা নিয়ে কোনো টু-শব্দ নেই দলটিতে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, শূন্যপদ পূরণ এবং বাকি কমিটিগুলো দেওয়ার ব্যাপারে ম্যাডাম খুবই আন্তরিক। এক এক করে খুব শিগগিরই এ কাজগুলো করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৭
এজেড/আরআই

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।