সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ আরও কয়েকজন নেতা।
পুলিশের ‘বাধা’য় তাদের সে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় আ স ম আবদুর রবের উত্তরার বাসায় চা-চক্রের আয়োজন করা হয়। নির্ধারিত সময়ে সেখানে উপস্থিত হন আমন্ত্রিতরা। তবে অতিথিদের আগমনের মধ্যেই পুলিশ ওই বাসায় গিয়ে অনুষ্ঠান তাড়াতাড়ি শেষ করতে বলে।
এ সময় উত্তরা পশ্চিম থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত অতিথিদের বলেন, ‘এখানে আপনারা কোনো মিটিং করতে পারবেন না। ’
চা-চক্রে অংশ নেওয়া বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, রব ভাইয়ের দাওয়াতে অংশ নিতে উনার উত্তরার বাসায় যাই। তখন পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টর আমাদের বলছেন, মিটিং করতে পারবেন না, দ্রুত শেষ করুন।
‘আমরা বলি ওখানে আমাদের জন্য খাবার রান্না হচ্ছে। তা খেয়ে আমরা যাব। প্রশ্ন হচ্ছে- এত ভীত হওয়ার কী আছে?’
এ বিষয়ে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আমার বাসায় রাজনীতিকদের জন্য ঈদ পরবর্তী চা-চক্রের আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ তাতে বাধা দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাসায় চা-চক্র করতে পুলিশের অনুমতি লাগে না। এটা পুলিশের কোনো বিষয় নয়। আমি পুলিশ কর্মকর্তাকে বলেছি, এখানে রাজনৈতিক কোনো বিষয় না। আপনারা এখন যান। এরপরও বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে অতিথিদের প্রবেশে বাধা দেয় তারা।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতা জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, গণফোরাম নেতা আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যর মাহমুদুর রহমান মান্না, আকরাম হোসেন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরীসহ আরও অনেকে অংশ নেন ওই ‘চা-চক্রে’।
এ বিষয়ে বদিউল আলম মজুমদার জানান, পুলিশ আসার পর রাত ১১টার দিকে আমন্ত্রিত অতিথিরা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে যার যার মতো চলে যান। এর আগে রবের দাওয়াতে রাত ৮টার দিকে ওই বাসায় গিয়েছিলেন তিনি।
বদিউল আলম আলম বলেন, সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আমরা খাওয়া-দাওয়া করেছি। হঠাৎ করে পুলিশ আসায় আমি বিস্মিত হয়েছি। পুলিশ এসে বলেছে, সভা করতে হলে অনুমতি নিতে হবে, পুলিশকে আগে অবগত করতে হবে।
‘কিন্তু আমরা তো ওখানে কোনো সভা করতে যাইনি। দাওয়াতে গিয়ে এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে ভাবিনি। ’
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী হোসেন খানের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তবে থানায় দায়িত্বরত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) উপ-পরিদর্শক (এসআই) সারোয়ার বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। ’
গত কয়েক বছর ধরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে ‘বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি’ গড়ে তোলার কথা বরাবরই বলে আসছেন ওই ‘চা-চক্রে’র আমন্ত্রিতরা। তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে কথা বলছেন নাগরিক ঐক্যের মান্নাও।
খালেকুজ্জামান নেতৃত্বাধীন বাসদ আরেকটি কমিউনিস্ট দল সিপিবির সঙ্গে জোটবদ্ধ রয়েছে। সাইফুল হকের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এখন রয়েছে গণসংহতির সঙ্গে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৭
এমএ/