তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘আদালত প্রাঙ্গনেও আমরা নিরাপদ নই। আমার গাড়িতে ইট-পাথর-পচা ডিম ছোড়া হয়েছে।
রোববার (১৬ জুলাই) দুপুরে ছাত্রলীগের হামলার পর ‘অবরুদ্ধদশা’ থেকে মুক্ত হয়ে আদালতের এজলাসকক্ষ ত্যাগের সময় এসব অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় তার স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাদিয়া নন্দিতা ইসলাম ও গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা ইমরানের সঙ্গে ছিলেন।
সাংবাদিকদের কাছে ইমরান বলেন, আজকে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় যারা ‘সন্ত্রাসী হামলা’ চালালেন, তারা সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তারাও আদালতে এসেছেন, আমিও আদালতে এসেছি। সরকারের প্রশ্রয়ে আজ যেসব ঘটনা ঘটছে, তাতে মানুষের সর্বশেষ ভরসাস্থল হিসেবে আদালতের ওপরও আস্থা রাখার জায়গাটুকু রইলো না।
আরও জানতে পড়ুন: **জামিনের পর ছাত্রলীগের ধাওয়ায় আদালতে আশ্রয় ইমরানের
এর আগে মানহানির মামলায় জামিন পাওয়ার পর আদালত থেকে বের হওয়ার পর ছাত্রলীগের ধাওয়ায় ফের আদালতের এজলাসকক্ষে আশ্রয় নেন ইমরান। আদালতের বাইরে অবস্থান নিয়ে ইমরানের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।
প্রায় পনের মিনিট এজলাসকক্ষে আটকে থাকার পর বাইরে আসেন ইমরান। এরপর গাড়িতে চড়ে বের হয়ে যান তিনি।
সকালে ভাস্কর্য অপসারণের প্রতিবাদে মশাল মিছিলে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তিমূলক স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগের মামলায় ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান ইমরান ও অন্য আসামি মঞ্চের কর্মী সনাতন মালো উল্লাস। শুনানি শেষে ৫ হাজার টাকার মুচলেকায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মাসুদ জামানের আদালত।
জামিন পাওয়ার পর আদালত প্রাঙ্গন ত্যাগের সময় ইমরানের গাড়িতে হামলা চালান ছাত্রলীগের কর্মীরা। তারা গাড়িতে ইট-পাথর ও পচা ডিম ছুড়ে মারেন। এ সময় গাড়ি ঘুরিয়ে ফের আদালতের এজলাসকক্ষে গিয়ে আশ্রয় নেন ইমরান।
আদালত প্রাঙ্গন ত্যাগের সময় ইমরান বলেন, ‘আমার ওপর বোমা হামলার খবরও ছিল’। মোনাজাতসহ গণজাগরণ মঞ্চের কয়েকজন কর্মী ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
রোববার আসামিদের জামিনের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট প্রকাশ বিশ্বাসসহ কয়েকজন আইনজীবী।
গত ৩১ মে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রব্বানী সিএমএম আদালতে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা আমলে নিয়ে ১৬ জুলাই আসামিদের হাজির হতে সমন জারি করেন আদালত।
মামলার বাদী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে ভাস্কর্য অপসারণের প্রতিবাদে গত ২৮ মে রাতে ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে গণজাগরণ মঞ্চের মশাল মিছিলে ‘ছি ছি হাসিনা, লজ্জায় বাঁচি না’, ‘বাংলাদেশ হারেনি, হেরে গেছে হাসিনা’ স্লোগান দেওয়া হয়। এ স্লোগানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে যে কটূক্তি করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তিনি ক্ষুব্ধ ও তার মানহানি হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে মুখপাত্রের দায়িত্ব নেন ইমরান। অন্য আসামি সনাতন মালো উল্লাস বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সংগঠক।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৭
এমআই/এএসআর
** আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন ইমরান-সনাতন
** আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন ইমরান-সনাতনের