রোববার (২৩ জুলাই) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) মিলনায়তনে বিআইবিএম ও ট্রান্স আইটি সলিউশন যৌথভাবে আয়োজিত “ব্যাংকের তথ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রস্তুতি” শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান।
তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়াও গভর্নর ব্যাংকগুলোতে তথ্য নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধিতে কর্মীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুধু ঢাকা বা বড় শহরে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রতিটি জেলা পর্যায়ে আয়োজন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিআইবিএম মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অারো বক্তব্য দেন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এবিবি চেয়ারম্যান আনিস এ খান, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো: শিরিন এবং ট্রান্স আইটি সলিউশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, বিআইবিএমের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ডঃ শাহ মো: আহসান হাবীব প্রমুখ।
এবিবি’র চেয়ারম্যান আনিস এ খান বলেন,ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। ব্যাংকারদের সচেতনতা বাড়ানো এবং প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রুবাইয়াত আকবর।
প্রবন্ধে বলা হয়, হ্যাকাররা প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে বিশ্বের কোথাও না কোথাও আক্রমণ করে যাচ্ছে। এক হিসেবে শুধু র্যান্সামওয়ার এর কারণেই ২০১৬ সালে ক্ষতি হয়েছে ১ বিলিয়ন ডলার। ২০১২ সাল নাগাদ সাইবার অপরাধজনিত ক্ষতির মাত্রা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৬ ট্রিলিয়ন ডলার। হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেবার পরিকল্পনা নিয়ে হ্যাকাররা প্রথমেই টার্গেট করে ব্যাংকের সাধারণ কর্মীদের আর তাদেরকে ভুলের ফাঁদে ফেলে গ্রাহক তথ্য চুরি এবং পেমেন্ট সিস্টেমে অনধিকার প্রবেশ করার জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এতে আরো বলা হয়, ২০১৭ সালে সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলা করতে ব্যাংকের সর্বস্তরের অধিকতর সচেতন করার কোন বিকল্প নেই। হ্যাকারদের আক্রমণের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে আর্থিক ও ব্যাংকিং খাত-বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। সে ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোতে কর্মরত সবাইকে সাইবার আক্রমণের ধরন সম্পর্কে ধারণালাভ ও এর প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত থাকা গুরুত্ব্পূর্ণ।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো: শিরিন বলেন, মাঝারি মাপের প্রাকৃতিক বিপর্ষয় হলে অনেক ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বন্ধ হয়ে যাবে। আর বড় ধরনের বিপর্যয় হলে কোন ব্যাংকেরই সেবা দেয়া সম্ভব নয়। কারণ ডাটা সেন্টারের যে ধরনের নিরাপত্তা দরকার তা ব্যাংকগুলোর নেই।
ট্রান্স আইটি সলিউশনের সিইও আমিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে তথ্য নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুধু ঢাকা বা বড় শহরে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রতিটি জেলা পর্যায়ে ব্যাংক কর্মীদের জন্য আয়োজন করতে হবে।
কর্মশালায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী সেশনে সাম্প্রতিককালের চাঞ্চল্যকর কয়েকটি সাইবার ঝুঁকি র্যান্সামওয়ার আর ফিশিং আক্রমণ কিভাবে পরিচালিত হয় তার বাস্তব নমুনা প্রদর্শন করা হয়। অনিরাপদ ওয়াইফাই ব্যাবহার করে ল্যাপটপ হ্যাক করার মাধ্যমে হ্যাকাররা কিভাবে আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নেয় তা উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের সামনেই তুলে ধরা হয়।
প্রচলিত ধারার চেয়ে ভিন্নধর্মী ট্রেনিংয়ে সাইবার বিপদ চোখের সামনে তুলে ধরে তা থেকে পরিত্রাণ পাবার উপায় দেখানো হলে সেটা অনেক বেশি কার্যকর হবে। পরিপূর্ণ সচেতন কর্মীরাই আর্থিক খাতের সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে উপস্থিত বিভিন্ন ব্যাংকের আইটি বিভাগের কর্মকর্তাদের জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
এসই/জেডএম