ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

দুর্নীতির দায়ে সাবেক এমপি ওহাবের ৮ বছরের কারাদণ্ড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৭
দুর্নীতির দায়ে সাবেক এমপি ওহাবের ৮ বছরের কারাদণ্ড কারাগারে নেওয়া হয়েছে সাবেক এমপি ওহাবকে। ছবি: বাংলানিউজ

যশোর: অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে দুর্নীতির দায়ে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি), বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও শৈলকূপা উপজেলা সভাপতি আব্দুল ওহাবকে আট বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৯ মাসের কারাদণ্ডাদেশ পেয়েছেন তিনি।

একইসঙ্গে তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৯৩ লাখ ৩৬৯ টাকা ৩২ পয়সার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যশোরের বিশেষ জেলা জজ নিতাই চন্দ্র সাহার আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনের  (দুদক) দায়ের করা মামলার এ রায় ঘোষণা করেন।

যশোর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আসামি ওহাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুদক আইনের ২৬ (২) ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড এবং ২৭ (১) ধারায় ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে অবৈধ উপায়ে অর্জিত ৯৩ লাখ ৩৬৯ টাকা ৩২ পয়সা টাকা মূল্যের সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদক নোটিশ দেওয়ার পর আব্দুল ওহাব তার সম্পদের বিবরণীতে ৮৩ লাখ ১২ হাজার ৩২৩ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব দেন। কিন্তু, দুদকের অনুসন্ধনকারী কর্মকর্তা অনুসন্ধান চালিয়ে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭৭৬ টাকার সম্পদের সন্ধান পান।

২০০৮ সালের ২৪ নভেম্বর দুদক সমন্বিত কার্যালয়, যশোরের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আব্দুল ওহাবের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। পরে ২০০৯ সালের ০৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক নাছির উদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেন।

চার্জশিটে অভিযোগ করা হয়, আব্দুল ওহাব নিজের নামে ছাড়াও স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের নামে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থে ৯০ লাখ ৫১ হাজার ৪৫২ টাকা ৭০ পয়সা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে গোপন করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নিজের নামে, মায়ের নামে, স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের নামে এবং বেনামে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সর্বমোট ৯৩ লাখ ৩৬৯ টাকা ৩২ পয়সার সম্পদের মালিকানা অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ মামলায় ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত ০৩ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের মাধ্যমে বিচারিক কার্যক্রম শেষ হলে ৩০ অক্টোবর রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এ মামলা বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেছিলেন আসামিপক্ষ। আপিল খারিজ করে গত ২১ আগস্ট মামলার বিচারকাজ চালিয়ে যাওয়ার আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।

এর আগে গত ২৫ অক্টোবর দুদকের অন্য মামলায় ঝিনাইদহ-২ (সদর ও হরিণাকুণ্ডু) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমানকে পৃথক ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন একই আদালত। একই সঙ্গে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়ে তাকেও কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।