বৃহস্পতিবার (০৯ নভেম্বর) রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে এ আবেদন জানান খালেদা। বেলা ১২টা থেকে আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন খালেদার আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
অরফানেজে ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনে অসমাপ্ত লিখিত বক্তব্য পাঠ করতে বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে প্রাঙ্গনে উপস্থিত হয়ে এজলাসে প্রবেশ করেন খালেদা জিয়া। একইসঙ্গে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও হাজিরা দিয়েছেন তিনি।
বেলা পৌনে এগারটায় তার গুলশানের বাসা থেকে আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা হন মামলা দু’টির প্রধান আসামি খালেদা জিয়া।
এর আগে চ্যারিটেবলে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা মকবুল আহমেদ ও মনিরুল ইসলামকে আসামি মনিরুল ইসলাম খানের পক্ষে পুনঃজেরা শেষ করেন অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম।
অরফানেজে গত ১৯ অক্টোবর থেকে আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন খালেদা। চ্যারিটেবলেও গত বছরের ০১ ডিসেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য পাঠ শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু ওইদিন শেষ না হওয়ায় সময় চান। এরপর কয়েক দফায় আদালতে না গিয়ে সময় বাড়িয়ে নেন। এরই মধ্যে তার আবেদন উচ্চ আদালতে মঞ্জুর হওয়ায় সাক্ষীদের পুনঃজেরা চলছে।
অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচজন হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বিদেশে থাকা তারেক রহমানকেও পলাতক দেখিয়ে মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে। অন্য দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩২ জন সাক্ষী।
অন্যদিকে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। অন্য তিনজন হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক। অন্য দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।
এ মামলায়ও সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩২ জন সাক্ষী।
২০১০ সালের ০৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করে দুদক। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে ২০০৮ সালের ০৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৭
এমআই/এএসআর