স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ দিবস উপলক্ষে শনিবার (৩ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রব। ‘৩ মার্চ, ৭১ উদযাপন কমিটি’র উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
রব বলেন, ‘আচার-আচরণ দেখে মনে হচ্ছে না অন্য দল নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। ২০১৪ সালের জানুয়ারির মতো আরও একটি নির্বাচন করতে চান। আর কেউ যেন না আসে। ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা করে দেবো। ’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিক সমাবেশে ভোট চাচ্ছেন অভিযোগ তুলে রব বলেন, হেলিকপ্টার নিয়ে, গাড়ি নিয়ে, রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা নিয়ে, স্কুল-কলেজ ছুটি দেওয়া হচ্ছে দেশে-বিদেশে জনসভা করে একটা দলের পক্ষে ভোট চাওয়ার জন্য।
রব বলেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না বিরোধী দলকে রাস্তায় দাঁড়াতে দিচ্ছেন না। সভা-সমাবেশের অনুমতি দিচ্ছেন না, মিছিল করার সুযোগ দিচ্ছেন না। তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে শত শত মানুষ মরে গেছে, আমরা কি ভুলে গেছি, এই দায় সরকারকে নিতে হবে। ’
বিএনপিসহ বিরোধী জোটের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ারও সমালোচনা করেন রব।
‘দুঃশাসন থেকে মুক্তির জন্য, গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য, শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ, বেঁচে থাকার মতো অবস্থা নেই। ঘরে থাকলেও আসা যাবে না…, ছয় বছরের শিশু ধর্ষিত হয়। পরিণতি ভয়াবহ। এই কারণে অন্যদের যা হয়েছে… আপনাদেরও তাই হবে। ’
তিনি বলেন, শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য একটা জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন। পৃথিবীর কোথাও ফ্যাসিবাদ-স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে একক দলের পক্ষে আন্দোলনে জয়লাভ করা সম্ভব নয়। ডান ঐক্য গড়লে হবে না; বাম, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক সব রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারীর পতন ঘটাতে হবে।
স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ দিবসের এই আলোচনায় ইশতেহার পাঠক শাজাহান সিরাজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সচিব ব্যারিস্টার শুক্লা সারওয়াত সিরাজের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন-বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এর নবনিযুক্ত ‘বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক’ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টিবোর্ড সদস্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কবি আল মুজাহিদী প্রমুখ।
ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর ছিল তরুণ প্রজন্ম। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি পর্বে নবীনরা অনেক এগিয়েছিল। ষাটের দশকে অন্তত ছয়টি সংগঠন স্বাধীনতার কথা চিন্তা করছিল, একটির সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্টতা গড়ে উঠে। তরুণরাই অল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় পতাকা তৈরি করেছিল।
তিনি বলেন, কলা ভবনের সামনে ছাত্র-জনতার সমাবেশ চলছিল, শেখ জাহিদ নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী পতাকা নিয়ে এলেন, ২ মার্চ সেই পতাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের ছাদে উড়ালেন শাজাহান সিরাজ, পতপত করে উড়ছিল পতাকা। ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে পঠিত হলো স্বাধীনতার ইশতেহার, বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতে একবার এবং উপস্থিতিতে ইশতেহার পাঠ করলেন শাজাহান সিরাজ। খুব দ্রুত বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য পরিবর্তনগুলো এলো তরুণদের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৮
এমআইএইচ/আরআর