আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতাদের মতে, যেসব দাবিতে বিএনপি আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে তাতে জনসমর্থন নেই। বিএনপির দাবিতে কোনো ধরনের ছাড় না দিতে অনড় অবস্থানই অব্যাহত রাখবে ১৪ দল।
কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সহায়ক সরকারের দাবি মেনে না দিলে দলটি নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে আসছে। এই দাবিতে আন্দোলনেরও কথা বলা হচ্ছে বিএনপির পক্ষ থেকে।
আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতারা জানান, দুর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়ার আদালতে সাজা হয়েছে। তার মুক্তি পেতে হলে আদালতের মাধ্যমেই পেতে হবে। এটা নিয়ে বিএনপি আন্দোলন করতে গেলে এবং আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করলে সরকারও কঠোর অবস্থানে যাবে। প্রশাসনিকভাবে সরকার সেটা মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলও রাজনৈতিকভাবে মাঠে থাকবে বলে জোট নেতারা জানান।
তারা বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন বিএনপি বর্জন করে এবং নির্বাচন বানচালের জন্য নাশকতা ও সংহিসতা চালায়। এ বিষয়টিও সরকার ও ১৪ দলের চিন্তায় রয়েছে। তবে এ ধরনের কোনো পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সে জন্য আগে থেকেই প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীকে আগে থেকেই সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি যেসব দাবির কথা বলছে এসব আদালতের বিষয়, সংবিধানের বিষয়। এসব নিয়ে বিএনপি কোনো আন্দোলন করতে পারবে না, কারণ তাদের এসব দাবির প্রতি জনসমর্থন নেই। দুর্নীতির দায়ে আদালতে খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে। আর নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। তবে এসব নিয়ে বিএনপি আন্দোলনের নামে কোনো বিশৃঙ্খলা করতে চাইলে সেটা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে মোকাবেলা করবো।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির আন্দোরন করার কোনো সাংগঠনিক শক্তি নেই। তারা কোনো আন্দোলন করতে পারবে না। তবে আন্দোলনের নামে যদি কোনো ধরনের নাশকতার চেষ্টা করে তবে জনগণ সমুচিত জবাব দেবে, প্রশাসন আছে মোকাবেলা করবে।
১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বাংলানিউজকে বলেন, দুর্নীতির দায়ে দেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তির সাজা হতে পারে এটা একটা নতুন দৃষ্টান্ত। এই দৃষ্টান্তের ধারায় এখনও যারা আমাদের সরকারের আমলেও দুর্নীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর যদি সাজা হতে পারে তবে এই সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে যারা দুর্নীতি করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। বিএনপি যতই বলুক একজন দুর্নীতিবাজকে ছেড়ে দেওয়ার পরই তারা নির্বাচনে যাবে এই আবদার শোনার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। আমরাও সংগ্রাম করে লড়াই করে যাচ্ছি যে, সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলবে। এটা নিয়ে তারা কোনো আন্দোলন করতে চাইলে জনগণ সারা দেবে না। কোনো নাশকতা করতে চাইলে বা নির্বাচন বানচাল করতে চাইলে মোকাবেল করবো।
জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, একটা রাজনৈতিক দল আন্দোলন কতেই পারে। কিন্তু তারা যে দাবিতে আন্দোলন করতে চায় তার সঙ্গে আমরা একমত না। তারা জনসমর্থন নিয়ে আন্দোলন করুক, এই দাবিতে নির্বাচনে আসুক, জনগণ যদি তাদের পক্ষে রায় দেয় তবে বিজয়ী হবে। নির্বাচন সংবিধানে যেভাবে আছে সেভাবে হবে। যদি কোনো নাশকতা বা বিশৃঙ্খলা তৈরির চ্ষ্টো করে সেটা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মোকাবেলা করবে।
জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার বলেন, দুর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে। এ জন্য কিসের আন্দোলন? তারা আন্দোলন করতে পারে সেটা ভালো আর যদি আন্দোলনের নামে নাশকতা করে তবে সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৮
এসকে/এমজেএফ