চট্টগ্রাম: ঈদের পর চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনগুলোর কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। এ কাউন্সিলের মাধ্যমেই ঢেলে সাজানো হবে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত নগর আওয়ামী লীগকে।
এছাড়া ২০১১ সালে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক কমিটি চট্টগ্রাম উত্তর ও দণি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করা হবে।
বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘সংস্কার, আহ্বায়ক কমিটি কোনোটাই এখন হচ্ছে না। ঈদের পর তৃণমূল পর্যায়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে চট্টগ্রামে দলকে পুর্নগঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ’
বিগত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের ভরাডুবির পর নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন কমিটি ভেঙে দিয়ে দ্রুত সংস্কারের দাবি ওঠে।
নগর আওয়ামী লীগ নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে পরাজয়ের পর প্রথমে নগর কমিটির সভাপতি পদ থেকে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে বাদ দিয়ে নগর আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন এবং পরে তাকে রেখেই দলের ভেতর সংস্কারের দাবি ওঠে।
এ প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সমর্থন ছিল দলের নীতিনির্ধারকদেরও। তবে নতুন নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় নেতাদের মধ্যে কোন্দল বেড়ে যাওয়ায় নগর আওয়ামী লীগে কয়েকটি ভাগ হয়ে গেলে সংস্কার প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়ে।
নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম সুজন এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজটোয়েন্টিফার.কম.বিডিকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে নগর আওয়ামী লীগে তিনটি ভাগ ছিল। এখন ছয়টি। মহিউদ্দিন চৌধুরীবিরোধী গ্র“প আছে তিনটি। আবার মহিউদ্দিন ভাই, আফসারুল আমিন (প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রী) এবং আবদুছ ছালামের (সিডিএ চেয়ারম্যান) মধ্যে নির্বাচনের পর থেকে মুখ দেখাদেখিই বন্ধ। এতো বিভক্তি নিয়ে দলে সংস্কার, পুনর্গঠন, কাউন্সিল কীভাবে হবে তা একমাত্র আল্লাহই জানেন। ’
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘নগর আওয়ামী লীগের কোন্দল নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মতামত ও মূল্যায়নেও ভিন্নতা রয়েছে। একপ মনে করেন, নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্থানীয় রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া উচিৎ। অন্যদিকে, তার নেতৃত্বেই নগর আওয়ামী লীগ পুনর্গঠিত হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন আরেক প। ’
এ পরিপ্রেক্ষিতেই সংস্কার বাদ দিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নগর আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান ওই নেতা।
বিষয়টি স্বীকার করে আহমদ হোসেন বলেন, ‘মহিউদ্দিন চৌধুরী জাতীয় রাজনীতিতে যাবেন নাকি স্থানীয় রাজনীতিতে থাকবেন সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে তার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি। ’
তিনি আরও বলেন, ‘যতোই কোন্দল থাক, কাউন্সিলের মাধ্যমে সব পকে এক কাতারে এনে নেতৃত্বের সমন্বয় করা হবে। ’
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি ও কাজী ইনামুল হক দানুকে সাধারণ সম্পাদক করা হলেও পাঁচ বছরে তারা নগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি। আর তিন বছরমেয়াদি এ কমিটির মেয়াদও ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১০