সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন সালাম মুর্শেদী।
এসময় তিনি খুলনা-৪ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আজিজুল বারী হেলালের বিরুদ্ধে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলন সালাম মুর্শেদী জানান, গত কয়েকদিনে তার নির্বাচনী এলাকা রূপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া এলাকায় ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নিজে ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হামলা, ভাঙচুর চালিয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা গত ২১ ডিসেম্বর দিনগত রাতে তেরখাদা উপজেলার হাড়িখালি, ২২ ডিসেম্বর দিনগত রাতে তেরখাদা উপজেলার চর কুশলাতে আমার নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেন। ২৩ ডিসেম্বর দিনগত রাতে রূপসা উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়নে রাজাপুর বারোপুনের মোড় এলাকায় নির্বাচনী অফিস পুড়িয়ে দেন। সন্ত্রাসীরা এসময় সাইদ নামে একজন আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে আহত করেন। এসময় সন্ত্রাসীরা তার ব্যবহারিক মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দেন। একইভাবে গত ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রূপসার জাবুসা এলাকা থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে যুবলীগ নেতা মোস্তাককে কুপিয়ে আহত করেন। এসময় বিএনপির সন্ত্রাসীরা ৩/৪টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোল্ল্যা জালাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
অপরদিকে, দুপুরে মহানগরের কে ডি ঘোষ রোডে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন খুলনা-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
এসময় তিনি সেনাবাহিনী মোতায়েন হওয়ায় জনগণের মনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের পুরোপুরি দায়িত্ব তাদের ওপর অর্পণের দাবি জানান।
মঞ্জু বলেন, ভোটের মাত্র পাঁচদিন আগেও ধানের শীষের কর্মীদের গণগ্রেফতার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশির নামে ভাঙচুর-তাণ্ডব চালানো, হুমকি ভয়ভীতি দেখানো, গায়েবি মামলায় তাড়াহুড়া করে চার্জশিট দিয়ে শত শত নেতাকর্মীকে আসামি করা হচ্ছে। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে আসা বিজিবিকে বিভ্রান্ত করে তাদের সঙ্গে নিয়ে সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ মহানগরের বিভিন্ন স্থানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
খুলনা থেকে বিদায় নেওয়া পুলিশ কমিশনারের দেওয়া উদ্দেশ্যমূলক তালিকা নয়, সেনা গোয়েন্দাদের হাতে থাকা তালিকা ধরে আসামি গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা যেন নির্বাচনে মূল পক্ষ হয়ে কাজ করতে পারি নির্বাচন কমিশন ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা করছি।
নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, মাত্র দেড় মাস আগে খুলনার ৭ থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৯টি গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়। কেএমপির সদ্য বিদায় নেওয়া কমিশনার যাওয়ার আগে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) নিয়ে বৈঠক করে সব মামলায় চার্জশিট দেওয়ার অনুমতি দিয়ে যান। এরপর একের পর এক চার্জশিট দিয়ে বিএনপির শত শত নেতাকর্মীকে আসামি করা হচ্ছে। আর তাদের গ্রেফতারের জন্য চলছে পুলিশ ও ডিবির অভিযান।
রোববার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে ডিবি পুলিশ স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আজিজুল হাসান দুলুকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার হয়েছেন বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান, আনসার আলী হাওলাদার, মোহাম্মদ আলী, আজাদ হোসেন, বনি আমিন। এদের মধ্যে কয়েকজন রয়েছেন যাদের বয়স ৭০’র ঊর্ধ্বে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৮
এমআরএম/আরবি/