ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকারে না বিরোধী দলে, ১৪ দলের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
সরকারে না বিরোধী দলে, ১৪ দলের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি ১৪ দলীয় জোট

ঢাকা: জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নির্বাচিত সদস্যদের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি উঠেছে জোটের সভায়। সেই সঙ্গে ১৪ দলের সব শরিক দলকে মূল্যায়নের দাবি করা হয়েছে।

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ১৪ দলের সভায় এ দাবি তোলা হয়। সভা শেষে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

 

গত ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের পর এটাই ১৪ দলের প্রথম সভা। এর আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন দুটি সরকারের মন্ত্রিসভায় ১৪ দলের শরিক দলগুলো থেকে মন্ত্রী করা হয়। কিন্তু বর্তমান সরকারে ১৪ দলের কেউ স্থান পাননি।

সূত্র জানায়, ১৪ দলের সভায় জাসদের সভাপতি সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সংসদে ১৪ দলের অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।  

তিনি বলেন, ১৪ দলের শরিক আমরা যারা সংসদ সদস্য, আমরা যদি ১৪ দলে থাকি তাহলে তো আমাদের সংসদে সরকারি দলের বেঞ্চে বসার কথা। আর আমাদের বিরোধী দলে বসতে হলে ১৪ দলে থাকা কেন? আবার আমরা যদি ১৪ দলগতভাবে না-ই থাকি, তাহলে আর সরকারি দলের বেঞ্চেই বা বসা কেন? আমরা সরকারি না বিরোধী দলে আছি, আমাদের অবস্থান কোথায়? সেটি স্পষ্ট হওয়া দরকার।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, দেশে বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে মনে হয় আমরা একটি পুলিশি রাষ্ট্রে বসবাস করছি। আমরা কি পুলিশি রাষ্ট্রের দিকে চলে যাচ্ছি? পুলিশ যা ইচ্ছে তাই করছে। এতে সরকার সম্পর্কেও জনমনে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাচনে ওয়ার্কার্স পার্টির এক প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে গেলে পুলিশ তাকে বলেছে অনুমতি লাগবে। সভায় এ প্রসঙ্গটি তুলে ধরে রাশেদ খান মেনন তার ক্ষোভের কথা জানান। পাশাপাশি গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগির বিষয় নিয়ে ১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। এটা নিয়ে জোটে আলোচনা করা উচিত ছিলো বলে সভায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাশেদ খান মেনন।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ১৪ দলে থাকা ছোট-বড় দল সবাইকে মূল্যায়ন করা দরকার। অনেকে বড় দল থেকে এমপি হয়েছেন, এমপি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন, মন্ত্রি হয়েছেন। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও কয়েকটি দল থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলো কিছুই পায়নি। এদের মূল্যায়ন হওয়া দরকার। কোনো কোনো দল একেবারে মূল্যায়ন না হলে হতাশ হবে। কোনো দলে দুই জন থাকুক আর ৫ জন থাকুক, প্রত্যেকেরই তো একটা প্রত্যাশা থাকে। প্রত্যেককেই সম্মান দেওয়া উচিত।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়ার সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের সমালোচনা করেন জোটের কয়েকজন নেতা। সভায় এ বিষয়ে তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, ১৪ দলের শরিক হয়েও সম্প্রতি একটি টেলিভিশনের টকশোতে শরীফ নুরুল আম্বিয়া নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে কিনা তা নিয়েও সংশয় জানিয়েছেন তিনি। এতে মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর বক্তব্যে সমর্থন জানান ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তারা বলেন, শরিফ নুরুল আম্বিয়ার এ ধরনের কথা বলা ঠিক হয়নি। ১৪ দলের মধ্যে থেকে নির্বাচন নিয়ে এমন প্রশ্ন তোলা ঠিক হয়নি। এটা জোটের নীতিরও পরিপন্থি। জোটে থাকতে হলে নীতি মেনেই কথাবার্তা বলতে হবে।

এ সময় সভায় উপস্থিত বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেছেন, এটা আমাদের জাতীয় পরিষদের সভার মূল্যায়ন, সেটাই আমাদের দলের সভাপতি বলেছেন। এটা আমাদের জাতীয় পরিষদের সিদ্ধান্ত, এটা তো এখন আমরা রিভিউ করতে পারবো না।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯ 
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।